eaibanglai
Homeএই বাংলায়আসানসোলের কন্যাপুরে বিখ্যাত কয়লা চোর এখন ভাগবৎ পাঠে মগ্ন, গেরুয়া ঝড়েই কী...

আসানসোলের কন্যাপুরে বিখ্যাত কয়লা চোর এখন ভাগবৎ পাঠে মগ্ন, গেরুয়া ঝড়েই কী এই বদল?

নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ ২০১৯ লোকসভা ভোটের ফলাফল এখন দেশবাসীর ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের নিজের রেকর্ডকেই ভেঙে চুরমার করে দিয়ে লোকসভা ভোটে নিজের অশ্বমেধের ঘোড়া ছুটিয়েছেন নরেন্দ্র দামোদর মোদী। লোকসভা ভোটের প্রচার থেকে শুরু করে ভোট চলাকালীন বিরোধীদের অভিযোগ, ঢালাও প্রতিশ্রুতি কোনও কিছুই ১৩০ কোটির দেশ ভারতবর্ষ গেরুয়া শিবিরের বিজয় রথের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। এতো গেল দেশে বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদীর জয়জয়কারের কাহিনী। যে সুনামির হাত থেকে রক্ষা পেল না তৃণমূল কংগ্রেস তথা দাপুটে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের পশ্চিমবঙ্গও। মুখ্যমন্ত্রীর ৪২-এ ৪২-এর স্বপ্ন ভেঙে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত পরিসংখ্যান পালটে দিয়ে বিজেপি দখলে নিল ১৮টি আসন। যার মধ্যে অন্যতম আসানসোল। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের হাত ধরে তৃণমূলের তারকা নেত্রী মুনমুন সেনকে লক্ষাধিক ভোটে হারিয়ে আসানসোল জয় করল বিজেপি। আর আসানসোলে গেরুয়া শিবিরের এই আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার প্রভাব তাৎপর্যপূর্ণভাবে ধরা পড়ছে দীর্ঘদিন ধরে আসানসোলের বুকে চলে আসা কয়লা, লোহা, মাদক দ্রব্য, অস্ত্র কারবারিদের কাজকর্মে। আসানসোলের সাংসদ হিসেবে আসার পরে একাধিকবার সেখানে মাফিয়া রাজ এবং সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর অভিযোগ ছিল, আসানসোলে শাসকদলের কিছু প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় সমগ্র আসানসোল এলাকা জুড়ে মাফিয়া রাজ চলছে। কিন্তু সবথেকে অবাক করার বিষয় হল, বৃহস্পতিবার অর্থাৎ গতকাল লোকসভা ভোটে বিজেপির জয়লাভের পরপর রাতারাতি ভোল পাল্টেছে আসানসোলের একাধিক মাফিয়া। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আসানসোলের কন্যাপুরের এক দাপুটে কয়লা মাফিয়ার কথা। জানা গেছে, লোকসভা ভোটের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই কন্যাপুরে সেই কয়লা মাফিয়ার উদ্যোগেই বসেছে বিশাল ভাগবৎ পাঠের আসর। শুক্রবারের এক প্রথম সারির বাংলা দৈনিক সংবাদপত্রে ফলাও করে বিজ্ঞাপন দিয়ে বীরদর্পে নিমন্ত্রিত করেছেন সমগ্র জেলাবাসীকে তার ভাগবৎ পাঠের আসরে উপস্থিত হওয়ার জন্য। রইল সেই বিজ্ঞাপনের চিত্র।

শুধু তাই নয়, বৃন্দাবন থেকে আগত শ্রী দেবকীনন্দন ঠাকুর জীর সঙ্গেই গেরুয়া বসনে সজ্জিত হয়ে ভাগবৎ পাঠে মগ্ন স্বয়ং কন্যাপুরের ত্রাস ওই দাপুটে কয়লা মাফিয়াও! বুঝুন তাহলে, এযেন ঠিক দস্যু রত্নাকরের “মরা মরা উচ্চারন থেকে রাম রাম” বাল্মিকী হয়ে ওঠার কাহিনীকেও হার মানায়। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কেন? কোন জাদুদন্ডে লোকসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে আসানসোলের দাপুটে মাফিয়াদের এহেন ভোলবদল? তাহলে কী রাজ্য তথা দেশে গেরুয়া শিবিরের আগমনই এর পেছনে একমাত্র কারণ? তাছাড়া আর কিই বা হতে পারে? কারণ কন্যাপুরের যে কয়লা মাফিয়ার নামে বর্তমানে বিভিন্ন থানায় ৩০টিরও বেশি খুন, বেআইনি কয়লা পাচার, লোহা পাচার, মাদক দ্রব্যের কারবার, নারী পাচারের মতো বিভিন্ন মামলা রয়েছে এহেন এক কয়লা মাফিয়ার আচমকা ৩৬০ ডিগ্রী ঘুরে যাওয়া মূলত গেরুয়া শিবিরের আগমনের কারণেই তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধু কি পুলিশি মামলা, এই বাংলায় নিউজ পোর্টালের কাছে এই মুহুর্তে তার থেকেও বেশি তথ্য রয়েছে ওই কয়লা মাফিয়ার বিরুদ্ধে। আসানসোলের কন্যাপুরের ওই কয়লা মাফিয়ার আত্মীয়-স্বজনের বর্তমান সম্পত্তি, বিপুল সম্পত্তি তথা কোটি কোটি টাকা আয়ের উৎস, দুর্গাপুরে বসবাসরত তার মামার বিশাল অট্টালিকা, বিলাসবহুল জীবনযাপনের সমস্ত চুলচেরা তথ্য এই মুহুর্তে এসেছে এই বাংলায় নিউজ পোর্টালের হাতে। পরবর্তী বিভিন্ন পর্বে তা পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হবে। তবে এই সমস্ত কিছুর মধ্যেও কন্যাপুরের দাপুটে ওই কয়লা মাফিয়ার বিষয়ে আলাদাভাবে যে তথ্য আমাদের পাঠকদের কাছে না তুলে ধরলেই নয় তা হল তাঁর সমাজদরদী মনোভাব। আজ অবধি যত জন গরীব-দুঃখী বা কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা ওই কয়লা মাফিয়ার কাছে সাহায্যের আশায় গিয়েছেন তাদের কাউকেই খালি হাতে ফেরত আসতে হয়নি। কিন্তু পাপের টাকাই কোনও দিন পূণ্য লাভ সম্ভব নয়। কারণ বিভিন্ন কয়লা খাদান থেকে যেসমস্ত শ্রমিকদেরকে জোর করে প্রাণের ভয় দেখিয়ে কয়লা মাফিয়া বা সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা দিনের পর দিন কয়লা উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা রোজগার করছে সেই শ্রমিকদেরকেই ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে অন্ধকার খাদানে, কখনও কখনও কোনও শ্রমিক কয়লা খাদানে দুর্ঘটনার জেরে প্রাণ হারালে সেই শ্রমিকের পরিবার অসহায়, অনাথ হয়ে নিঃশ্বেষ হয়ে যাচ্ছে। তাই পাপের সেই টাকায় সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ হলেও সেই সমাজ সেবা কাউকেই পূন্য অর্জনের সুযোগ দেয় না। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বর্তমানে কন্যাপুরে যে বিশাল ভাগবৎ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সেখানে ওই কয়লা মাফিয়া গেরুয়া বসন পরিহিত হয়ে ভাগবত পাঠ কিংবা দুঃস্থদের সাহায্য যাই করুন না কেন তা কোনও দিন পূন্যের পথে পরিচালনা করতে পারে না।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments