বিশেষ প্রতিনিধি, দুর্গাপুরঃ- আইনি জটিলতায় দুর্গাপুরে ফেঁসে যাওয়া বাতিল বিমান টি আসলে পাঁচ বছর ধরে কলকাতা বিমান বন্দরের হ্যাঙারে পড়েই ছিল অনাদরে। কেন্দ্রীয় সরকারি মেটাল স্ক্র্যাপ ট্রেডিং কর্পোরেশনের অকশনে ভাঙা চোরা লোহার দরে, ১৮ লক্ষ টাকায় বাতিল বিমানটি কিনে নেন রাজস্থানের ব্যবসায়ী, রেস্টুরেন্ট বানাবেন বলে।

১৯৮০ সালের ৩১ জুলাই ভি.টি.-ই.জি.জি. সিরিজের মালবাহী কার্গো বিমানটি প্রথম আকাশে ওড়ে। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে বিমান যোগে এয়ারমেল সার্ভিসের প্রস্তাব পাশ হওয়ার পর ভারতীয় ডাক বিভাগ ২০০৭-র ২৪ অগষ্ট এয়ার ইন্ডিয়ার কাছ থেকে লীজে নেয় বোয়িং- ৭৩৭, টুএ৮ (এ) (এফ) সিরিজের বিমানটি। “সেই হিসেবে বিমানটি ৩৯ বছর চার মাস বয়সের। তবে, ২০১৪-র এপ্রিল মাসে এটিকে পরিসেবা থেকে সরিয়ে কলকাতা বিমান বন্দরের হ্যাঙারের দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়”, জানালেন এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার কলকাতা বিমান বন্দরের দায়িত্বে থাকা এক বরিষ্ঠ আধিকারিক। বিমানটি চালু অবস্থায় সর্বশেষ ছবিটি রয়েছে দুর্লভ বিমানের ছবি সংগ্রাহক অর্জুন স্বরূপের হেপাজতে। তিনি জানান, “ছবিটি আমি ২০১০-র ৮ এপ্রিল তুলেছিলাম কলকাতায়। তার চার বছর পর ওই বিমানটি কে বসিয়ে দেওয়া হয়”।

ডাক পরিষেবার কাজে নিযুক্ত হওয়ার আগে, বিমানটি এয়ার ইন্ডিয়ার মাল পরিবহন বিভাগে খাটছিল। “কলকাতা বিমান বন্দরে এখনি ১২ টির মতো বাতিল বিমান রয়েছে। একে এ গুলির অকশন করে ইচ্ছুক ব্যাবসায়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। দুর্গাপুরে আটকে যাওয়া বিমানটি গত শনিবার আমাদের হ্যাঙার থেকে একটি ট্রেলারে চাপানো হয়। আমাদের কাছে বিমানটির বৈধ কাগজপত্রের যাচাই করার জন্য দুর্গাপুর পুলিশ যোগাযোগ করেছিল”, বলে বিমান বন্দরের ওই আধিকারিক জানালেন। দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট বাতিল বিমানটি আম্বালার বিমান রেস্টুরেন্টের ধাঁচেই উচ্চ-মধ্যবিত্তদের জন্য আলাদা একটি বিমান রেস্তোঁরা বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে জয়পুরের ব্যবসায়ীর। আগে ছিল ‘আকাশ পরী’। পেটে ভরে চিঠি বয়ে নিয়ে যেত- উত্তর-পূর্বে, এখন সেই ডানাকাটা পরী-ই থমকে, নিথর দুর্গাপুরের ওয়ারিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে।
