eaibanglai
Homeএই বাংলায়ভুতের রাজার বরপুত্র/৯# তিন দশক আগে দেওয়া আড্ডা'র জমি দিল্লিতে বসে বেচলেন...

ভুতের রাজার বরপুত্র/৯# তিন দশক আগে দেওয়া আড্ডা’র জমি দিল্লিতে বসে বেচলেন প্রাক্তন আমলাঃ নেপথ্যে কোল মাফিয়া?

বিশেষ প্রতিনিধি, দুর্গাপুরঃ- বত্রিশ বছর আগে ‘অ্যালট’ করা জমি বুক বাজিয়ে বার বার হাত বদল হতে পারে ‘ভুতের আড্ডা’ এ ডি ডি এ (আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্থা)’র কেরামতিতে। তবে, অভিযোগ – এই ধূর্ত হাত বদলের আসল কারিগর এ ডি ডি’এ র একটি ঘুঘুর বাসা। যেখানে নখ-দাঁত নিয়ে বসে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ কাটমানি লোটার মহাগুরু!
সংস্থায় চাকরি করা এক কেরানী অতনু মুখারজি কি ভাবে দিনে দুপুরে, সকল কে বোকা বানিয়ে অন্যের আস্ত একটি বাড়ী হড়ফ করে ফেলল, তা ইতিমধ্যেই দুর্গাপুর বাসীর নজরে এসেছে। অতনু’র বাড়ী লুঠ নিয়ে নাম কে ওয়াস্তে একটি আর’আই ওয়াশ’ তদন্ত করে গোটা বিষয়টি ধামাচাপা দিতে যখন তৎপর আড্ডা’র কর্তারা, তখনই ফের সামনে এসে গেছে সংস্থারই এক প্রাক্তন আমলার বে আইনী ভাবে জমি বেচার কারবার। সেই কারবারের দালালি’তে প্রত্যক্ষ ভাবে এক কয়লা মাফিয়া, এ ডি ডি এ’র এক শ্রেনীর কর্মী ও আধিকারিক যে জড়িয়ে, তার নজিরও মিলেছে। ওই কয়লা মাফিয়া কে ‘পাইয়ে দিতে’ আড্ডা’র পরিকল্পনা বিভাগের চশমাধারী এক নাটা পন্ডিত যে সব সময় অতি সক্রিয়, এ ডি ডি এ’র ‘এ টেবিল থেকে সে টেবিল’ তার ভুরি ভুরি নজির আছে। সংস্থারই পদস্থ আমলাদের কারো কারো মনে প্রশ্ন- “ওই কয়লা মাফিয়ার সাথে কি গোপন অংশীদারির গাঁটছাড়া ওই নাটা বাবুর? না হলে এত নির্লজ্জ ভাবে তার সব কাজ দ্রুত করিয়ে নেন কেন?”
আইন কে সম্পূর্ণ বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সিটি সেন্টারের আলাউদ্দিন খান বিথীতে ৩০ বছর ধরে ফাঁকা পড়ে থাকা একটি জমিতে কি ভাবে সবার চোখের সামনে গড়ে উঠল অট্টালিকা? ওই অট্টালিকা ধাপে ধাপে গজিয়ে ওঠার আগাগোড়া সবটাই হয়েছে ওই কোল মাফিয়ার তত্বাবধানে। তাকে প্রায়শঃই সেখানে ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। এলাকায় এমন প্রশ্ন ও উঠতে শুরু করে- তবে কি আড্ডার প্রাক্তন আমলার কাছ থেকে কোটি টাকার বিনিময়ে নাম ভাঙিয়ে আসলে জমি কিনছে ওই কোল মাফিয়া? অন্য একটি তদন্তে উঠে আসে- ওই কোলঁ মাফিয়া আসলে এক পুলিশ অফিসারের জন্যই ‘এ ডি ডি এ’কে ফিট করে ‘সরকারের সম্পত্তি’ ওই জমি লুঠ করালো!
তিন দশক আগে কাঠা পিছু ৮০০০ টাকা দামে কেনা জমি কাঠা পিছু ২০ লক্ষ টাকা দামে চুপি চুপি বেচে নাকে তেল দিয়ে, দিল্লিতে ঘুমাচ্ছিলেন আড্ডা’র এক প্রাক্তন আমলা। যিনি সব জানতেন- “এ ডি ডি এ র বন্টন করা ফাঁকা জমি এ ভাবে বিক্রী করা আইন বিরুদ্ধ। গর্হিত কাজ”। তারপরও সম্ভবতঃ কোল মাফিয়া আর তার শাগরেদ আড্ডা’র সেই আমলার ফাঁদে পড়ে তিনি এমন একটি বে আইনী কাজে জড়িয়ে পড়লেন!

২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ১/১, আলাউদ্দিন খান বিথি’র ফাঁকা জমিতে আচমকা নির্মাণ কে ঘিরে শুরু হয় চাঞ্চল্য। “কি ভাবে তিন দশক পর অন্য লোক এসে বাড়ি বানাচ্ছে ওই জমিতে? সরকারি সংস্থার নাকের ডগায় এ সব হচ্ছে, আর এ ডি ডি এ ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে বসে মধু খাচ্ছে”- এই প্রশ্ন তুলে সরব হল সিটি সেন্টারের ‘নন কোম্পানি রেসিডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’। ওই মাসেই গোটা বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ চেয়ে, বে আইনী কাজ বন্ধের দাবিতে এ ডি ডি এ’র চেয়ারম্যান তাপস বন্দোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত আবেদন জমা করে ওই অ্যাসোসিয়েশন। ওই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পীযূষ মজুমদার দাবি করেন, ” দীর্ঘদিন জমি ফেলে রেখে, বাজার দর বুঝে দিল্লিতে বসে এক আমলার পরিবার কোন আইনে ওই জমি বেচে দেওয়ার ছাড়পত্র পেলেন? কে দিল আর কি ভাবেই বা দিল? এ সবের তদন্ত চেয়েছি। সিটি সেন্টার জুড়ে একের পর এক এমন বে নিয়ম ঘটছে। বলার লোকও নেই, ধরার লোকও নেই”।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments