সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ- বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লকের সিমলাপাল গ্রাম পঞ্চায়েতের রামনগর গ্রাম। যে গ্রামে ২০০ পরিবারের বসবাস। গ্রামের কিছু পরিবার চাষবাসের উপর নির্ভরশীল হলেও গ্রামের বেশিরভাগ পরিবার দিন মজুরের কাজের সাথে যুক্ত। তাই এই লকডাউন পরিস্থিতিতে গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর পরিবার গুলি কর্মহীন। তাদের শুধুমাত্র রেশন থেকে পাওয়া চাল থেকেই কোনক্রমে চলছে সংসার। করোনা পরিস্থিতিতে আর্থিক অনটনে ভুগছিলেন গ্রামের কর্মহীন দরিদ্র দিনমজুর পরিবারগুলি। গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের হাতে রয়েছে ১০০দিনের জব কার্ড অথচ দীর্ঘ ৬ বছর ধরে ১০০দিনের কর্মসূচি থেকে বঞ্চিত তারা। এমনি দাবি গ্রামের শ্রমজীবী পরিবারগুলির। তাদের কথায় ২০১৪ সালে ১০০ দিনের কাজ করেছিলেন শ্রমিকরা। তারপর থেকে কোনো কাজ তারা পায়নি। পরের জমিতে শ্রমিকের কাজ বা অন্য কাজের মধ্য দিয়ে কোনক্রমে সংসার চালাচ্ছিলেন তারা। এলাকার পরিবারগুলি আশায় ছিলেন ১০০ দিনের কাজের। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও মেলেনি সেই কাজ। জেলার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজ করছেন শ্রমিকরা অথচ কেন বঞ্চিত তারা এই ক্ষোভ চেপে রেখেছিলেন গ্রামের শ্রমজীবী পরিবার গুলি। আজ প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে সেই ক্ষোভও তুলে ধরেন গ্রামের মানুষ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর নতুন কর্মসূচি “মাটি সৃষ্টি”। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পঞ্চায়েত এলাকায় নতুন করে শ্রম দিবস সৃষ্টি এবং নতুন করে ১০০ দিনের কাজে পরিবার কে কাজ দেওয়া মূলত লক্ষ্য। বিশেষ করে এই প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন ব্লকে পতিত জমি কে কাজে লাগিয়ে গ্রামীণ অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর উন্নয়ন করতে চাইছে রাজ্য সরকার। আজ বাঁকুড়া জেলায় এই প্রকল্পের সূচনা হলো জেলার বিভিন্ন ব্লকে। বাঁকুড়া জঙ্গলমহলের সিমলাপাল ব্লকের রামনগর গ্রামে শুরু হলো এই কর্মসূচির সূচনা। গ্রামের প্রবেশ পথে প্রায় ১৫০ বিঘা পতিত জমিকে কাজে লাগিয়ে আম বাগান তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে প্রশাসনিক ভাবে। মাটি সৃষ্টি প্রকল্পের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করলেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের মেন্টর অরূপ চক্রবর্তী। ছিলেন অন্যান্য আধিকারিকরা। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে এই আম বাগানটির জন্য নতুন করে ৪৩৩২ শ্রম দিবস তৈরি হবে। এই স্রমদিবসের মধ্য দিয়ে উপকৃত হবেন এলাকার ১০০ দিনের শ্রমিকরা। শুধু এই গ্রামেই নয় বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে মাটি সৃষ্টি প্রকল্পের মাধ্যমে বাঁকুড়া জেলা জুড়ে কর্মদিশার অঙ্গ হিসেবে বিশেষ রোজগার দিবস তৈরি হবে। একদিকে গ্রামীণ সম্পদ তৈরি হবে অন্যদিকে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। জেলার সমস্ত পঞ্চায়েত এলাকায় নতুন করে ২০০ পরিবার ১০০ দিনের কাজ করবে বলেই জানাচ্ছে প্রশাসন।