eaibanglai
Homeএই বাংলায়আসানসোলে আবাসিক অনাথ শিশুদের দিয়ে শিশুশ্রম, অত্যাচারে পলাতক তিন শিশু !

আসানসোলে আবাসিক অনাথ শিশুদের দিয়ে শিশুশ্রম, অত্যাচারে পলাতক তিন শিশু !

নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নাম করে অনাথ শিশুদের দিনের পর দিন শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার। অসহ্য অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি পেতে শিশু আবাসনের দেওয়াল টপকে পালালো আট জন শিশু। পরে পাঁচজন ধরা পড়লেও বাকি তিনজন পলাতক। সোমবার এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে আসানসোলের জামুরিয়া থানার অন্তর্গত সাতগ্রাম এলাকার আনন্দ আশ্রম আবাসিকে। জানা গেছে, ওই এলাকায় আনন্দ আশ্রম নামে ওই শিশু আবাসনটি দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে এই আবাসন চালানো হয় বলে এলাকাবাসীদের তরফে জানা গেছে। ঘটনার সূত্রপাত রবিবার দুপুরে। আবাসনের দেওয়াল টপকে আবাসিকের ১১ জন শিশুর মধ্যে ৮ জন শিশু পালানোর চেষ্টা করে। প্রাথমিকভাবে আবাসন থেকে পালিয়ে গেলেও আবাসন কর্তৃপক্ষের কানে এই খবর পৌঁছানো মাত্র শুরু হয়ে যায় তল্লাশি। শেষপর্যন্ত দুর্গাপুর এবং চিত্তরঞ্জন এলাকা থেকে পাঁচজন শিশুকে আটক করা গেলেও এখনও পলাতক বাকি তিনজন শিশু। এই ঘটনার পরেই স্বাভাবিকভাবে মানুষের মনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে যেই আবাসনে ছোট থেকে কাঁটালো শিশুগুলি তারা হঠাৎ করে পালিয়ে গেল কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেল, ওই আবাসনে শৈশব হারিয়ে গিয়েছিল অনাথ ১১ জন শিশুর। কারণ, নামে অনাথ আশ্রম হলেও এই আবাসনের শিশুদের খাবার, চিকিৎসা, ভালো পড়াশোনা কিছুই জুটত না বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, সকাল হতেই আবাসনের শিশুদের পড়াশোনা ও খেলাধূলা তো দূর অস্ত, আবাসনের সমস্ত কাজ করানো হত তাদের দিয়ে। আর না করলেই চলত পাশবিক অত্যাচার ও মারধর, খেতে দেওয়াও হত না বলে অভিযোগ। এমনকি ক্রিকেট ব্যাট, উইকেট দিয়েও মারধর করা হয় বলে জানিয়েছে আবাসনের অত্যাচারিত শিশুরাই। তাই দিনের পর দিন হয়ে চলা এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে রবিবার দুপুরে আবাসন থেকে পালানোর সিদ্ধান্ত নেয় ওই ৮ জন শিশু, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত পাঁচ জন শিশু ধরা পড়ে যায়, বাকি তিন জনের এখনও কোনও খোঁজ নেয়। এও জানা গেছে, রবিবার পালাতে গিয়ে ধরা পড়া ওই পাঁচ জন শিশুকে রবিবার থেকেই আবাসনের একটি ঘরে তালা বন্ধ অবস্থায় আটকে রাখা হয়েছে। খেতেও দেওয়া হয়নি তাদের। এরকম পরিস্থিতি গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, অনাথ আশ্রম চালানোর নামে এই সংস্থা সরকারের কাছ থেকে মাসের পর মাস মোটা টাকা আদায় করলেও অনাথ শিশুদের শৈশব অন্ধকারে ঠেলে দিয়ে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। তাদের আরও অভিযোগ, এলাকায় বহু শিশু পরিবার ছাড়া এবং আর্থিক বা শিক্ষাগত দিক থেকে পিছিয়ে, কিন্তু এই আবাসনে কোনও স্থানীয় গরীব শিশুকে রাখা হয় না। ঘটনার বিষয়ে জামুরিয়া থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অন্যদিকে সমস্ত অভিযোগের বিষয়ে আবাসন কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করা হলে তিন শিশুর পালানোর তথ্য স্বীকার করে নিলেও আবাসনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে কোনওরকম মন্তব্য করা হয়নি।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments