সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ-
সম্প্রতি জেলাপ্রশাসনের কাছে এবিষয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের চিঠি এসেছে। বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লীতে যখন এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেরার সেরা এই স্বীকৃতি তুলে দেওয়া হচ্ছে, ঠিক তখনই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ঐ প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে আনন্দ উৎসবে মাতলেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। চললো দেদার মিষ্টি মুখ। আর এমনই ছবি ধরা পড়লো বাঁকুড়া-১ ব্লকের কালপাথর গ্রামে। যেখানে বিডিও বিপ্লব কুমার রায় কর্মরত শ্রমিকদের মুখে মিষ্টি তুলে দিচ্ছেন। এই ঘটনায় খুশি সংশ্লিষ্ট কর্মী থেকে প্রকল্প আধিকারিক সকলেই।

সম্প্রতি জেলাপ্রশাসনের কাছে এবিষয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের চিঠি এসেছে। বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লীতে যখন এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেরার সেরা এই স্বীকৃতি তুলে দেওয়া হচ্ছে, ঠিক তখনই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ঐ প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে আনন্দ উৎসবে মাতলেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। চললো দেদার মিষ্টি মুখ। আর এমনই ছবি ধরা পড়লো বাঁকুড়া-১ ব্লকের কালপাথর গ্রামে। যেখানে বিডিও বিপ্লব কুমার রায় কর্মরত শ্রমিকদের মুখে মিষ্টি তুলে দিচ্ছেন। এই ঘটনায় খুশি সংশ্লিষ্ট কর্মী থেকে প্রকল্প আধিকারিক সকলেই।
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতরের সমীক্ষায় ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্ম সংস্থান নিশ্চিতকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নের নিরিখে দেশের মধ্যে শীর্ষ স্থানে রয়েছে বাঁকুড়া। এই তালিকায় বাঁকুড়ার পরে এ রাজ্যের কোচবিহার জেলার নাম রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে বাঁকুড়া জেলায় ১ কোটি ৫৬ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরী হয়েছিল। যা পরিবার পিছু গড়ে ৭৫ দিন। সবচেয়ে বেশী জোর দেওয়া হয়েছিল নদী সংস্কার, অনুর্বর জমি চাষযোগ্য করা ও সেচ সেবিত জমি বাড়ানো, ৭৫৬ হেক্টর জমিতে বৃক্ষরোপন করে আয়ের সংস্থান, ১১৮ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ৫৫৩ টি পুকুর খনন, ৩৭ হাজার ৭৬৬ হেক্টর জমি সেচের আওতায় আনা ইত্যাদি। আর এতেই মিলেছে এই সাফল্য।

জেলা প্রশাসনের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বাঁকুড়া-১ ব্লকের বিডিও বিপ্লব কুমার রায় কালপাথর গ্রামে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের মিষ্টি মুখ করানোর ফাঁকে বলেন, এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সকলের সম্মিলীত পরিশ্রমের ফল আমরা পাচ্ছি। দিনটা অত্যন্ত আনন্দের বলে তিনি জানান। কর্মরত শ্রমিক সুকুমার বাউরী বলেন, সেচের জলের অভাবে এই এলাকায় সেভাবে চাষাবাদ হয়না। কর্মসংস্থানের তেমন কোন সুযোগ নেই। তাই এই প্রকল্পই আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস। অনেক সময় বকেয়া বেতন পেতে দেরী হলেও তারা তা পান। ভবিষ্যতে আরো বেশী বেশী এই প্রকল্পে কাজ করতে তারা চান বলে জানান।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সন্দীপ বাউরী কেন্দ্রীয় এই প্রকল্পে প্রয়োজনীয় সাহায্য না মেলার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় অর্থ না মেলার পরেও সংশ্লিষ্ট আধিকারিক ও শ্রমিকদের কর্মকূশলতায় আমরা প্রথম। কেন্দ্রের সঠিক সাহায্য মিললে বাঁকুড়া জেলা আরো কয়েক কদম এগিয়ে যেত বলে তিনি দাবী করেন।
জেলাশাসক ডাঃ উমাশঙ্কর এস বলেন, এই প্রাপ্তি শুধু জেলার নয়, সারা রাজ্যের গর্ব। গত আর্থিক বছরে দেড় কোটি শ্রম দিবস তৈরী করা গেছে। এখানে এই প্রকল্পে তৈরী আমবাগান গুলি থেকে দেড় হাজার মেট্রিক টন উৎপাদিত আম রপ্তানী করা সম্ভব হয়। এমনকি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহযোগীতা নিয়ে একশো দিনের কাজ প্রকল্পে আপেল, বেদানা, আঙ্গুর, পেয়ারা চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমনকি স্বনির্ভর গোষ্ঠী গুলিকে বিভিন্ন ধরণের পশুপালনের শেড তৈরী করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ইন্দাসের আকুই গ্রাম পঞ্চায়েতের আকুই গ্রামে জৈব সার প্রকল্প তৈরী হয়েছে। ঐ গ্রামের একজন চাষী ঐ জৈব সার ব্যবহার করে দ্বিগুণ ফসল ঘরে তুলেছেন। ঐ সব কাজের পিছনেই একশো দিনের কাজ প্রকল্পের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। আর এই সাফল্য একেবারে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর থেকে জেলাপ্রশাসন সকলের মিলিত চেষ্টায় সম্ভব হয়েছে বলে তিনি জানান।
জেলার এই সাফল্যকে তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মিথ্যাবাদী’ বলতে ছাড়ছেনা বিজেপি। দলের নেতা সৌগত পাত্র বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার প্রচুর পরিমানে পয়সা দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যে দোষারোপ করেন কেন্দ্রকে। এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পে কেন্দ্রের পর্যাপ্ত সাহায্য না মিললে এই সাফল্য আসতো না বলে তিনি মনে করেন।