eaibanglai
Homeএই বাংলায়শিক্ষার আলোয় অন্যকে আলোকিত করে নিজেই অন্ধকারে ভগ্নপ্রায় বাড়িতে বৃদ্ধা

শিক্ষার আলোয় অন্যকে আলোকিত করে নিজেই অন্ধকারে ভগ্নপ্রায় বাড়িতে বৃদ্ধা

নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ নাম জ্যোৎস্না সেনগুপ্ত, বয়স কম করেও ৮০-র কাঠগড়ায়। তিন কাল পেরিয়ে জীবনের শেষ সীমায় পৌঁছেও নিস্তার নেই। থাকবেই বা কী করে, নিজের জীবন সংগ্রামে যে ব্রত তিনি নিয়েছিলেন তা তো আর সবার পক্ষে সম্ভব নয়। বাঁকুড়ার পাত্রসায়র ব্লকের হামিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পারুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা জ্যোৎস্না দেবী প্রায় ৩০ বছর ধরে নিজের গ্রামে অবৈতনিক একটি পাঠশালা চালিয়ে আসছেন। না এটা কোনও “মস্তি কি পাঠশালা” নয়। গ্রামের পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে তাদের “ঠাকুমার” এক জীবন সংগ্রাম। গত ৩০ বছরে এই শিক্ষাঙ্গন থেকেই প্রাথমিক শিক্ষালাভ করে আজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত বহু পড়ুয়া। বর্তমানেও গ্রামের প্রায় বেশির ভাগ স্কুল পড়ুয়ার প্রাথমিক শিক্ষালাভের কেন্দ্রস্থল জ্যোৎস্না দেবী পরিচালিত এই অবৈতনিক বিদ্যালয়। কিন্তু এতকিছুর পরেও জীবনের শেষ লগ্নে এসে মন ভালো নেই জ্যোৎস্না দেবীর। কারণ, গ্রামের যেসমস্ত শিশু ও কিশোরদের জন্য তিনি এই পাঠশালা চালাচ্ছেন সেই পাঠশালা আজ ধ্বংসপ্রায়। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে যে ছাদের নিচে তিনি পড়ুয়াদের শিক্ষা দিচ্ছেন তাঁর নিজেরই বসবাসের সেই মাথাগোজার ঠাইটুকু আজ ধ্বংসপ্রায়। কিন্তু নিজের ভিটেমাটির জন্য এতটুকু অনুশোচনা নেই জ্যোৎস্না দেবীর। তাঁর দুঃখ হল, ওই ভাঙা বাড়িতেই দিনের পর দিন আতঙ্কের মধ্যে পড়াশোনা করতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। কারণ ভগ্নপ্রায় ওই বাড়িটির যা অবস্থা তাতে যেকোনো দিন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে সমগ্র বাড়ি। ফলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় প্রহর গুনছেন ওই বৃদ্ধা। শুধু তাই নয়, পাঠশালার চারপাশে এত পরিমাণ জঙ্গল বেড়ে উঠেছে যে বিভিন্ন সময় স্কুল চলাকালীন সাপের উপদ্রবের মতো ঘটনাও ঘটেছে। বর্ষার এই মরসুমে যে চিন্তা বাড়িয়েছে কয়েকগুণ। এইসমস্ত কিছু মিলিয়ে তাই পড়ুয়াদের শিক্ষাদান করেও ভালো নেই জ্যোৎস্না দেবী। তাই শুধু নিজেদের শিক্ষার জন্য নয়, তাদের বৃদ্ধা শিক্ষিকা তথা জীবনের অগ্রদূত জ্যোৎস্না দেবীর জন্য একটি পৃথক বাসস্থানের দাবি জানিয়েছেন পড়ুয়ারা। পড়ুয়া এবং বৃদ্ধার পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রতিবেশীরাও। তাদের দাবি, জ্যোৎস্না সেনগুপ্তের জন্য প্রশাসনের তরফে একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হোক। তাহলে বৃদ্ধার মাথা গোঁজার একটু ঠাঁই যেমন পাবেন, তেমনি নিশ্চিন্ত আর নিরাপদে পড়াশোনা করতে পারবে এলাকার পড়ুয়ারা। এবিষয়ে জ্যোৎস্না দেবী জানান, ভালো লাগা থেকেই তিরিশটা বছর ছাত্র-ছাত্রীদের পড়িয়ে আসছেন। অন্যদিকে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ভাস্কর চন্দ্র বাগদি বলেন, বিষয়টি নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে সরকারী খাতায় তিনি এপিএল তালিকাভুক্ত হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments