সংবাদদাতা, কৃষ্ণনগরঃ-
রানাঘাট কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী সুস্মিতা। ৫ মাস আগে শুভজিৎ নামে এক যুবকের সাথে সুস্মিতার ফেসবুকে পরিচয় হয়। ফেসবুকেই সুস্মিতাকে প্রেমের আবেদন জানায় শুভজিৎ। এই আবেদনে সুস্মিতার সম্মতিও ছিল। এর মাঝখানে দুজনে একে অপরের সাথে দেখা ও হয়েছে। কিন্তু দুজনের মধ্যে ফেসবুকে চ্যাটের মাধ্যমেই বেশি কথা হত। সুস্মিতার বাবা বলেন, মেয়ের মুখে আমরা দুজনের মধ্যে নতুন সম্পর্কের কথা জেনেও ছিলাম। সুস্মিতার বাবা এও বলেন যে, আমরা সুস্মিতাকে ওই অচেনা যুবকের সাথে ফেসবুকের মাধ্যমে সম্পর্ক রাখতে বারনও করেছিলাম। কিন্তু আমার মেয়ে সুস্মিতা আমাদের কথা শুনতে রাজি হয়নি। তাই এর মাশুল আজ আমাদের গুনতে হল। সুস্মিতার পরিবারের অভিযোগ, শুভজিৎ ভালোবাসার নাম করে সুস্মিতাকে কিছু অশ্লীন ছবি পাঠাতে বলত নিজের প্রোফাইলে। আবার শুভজিৎ তার নিজের কিছু ব্যক্তিগত জীবনের ছবি তুলে সুস্মিতার প্রোফাইলে পাঠাতো। এর ঠিক কিছুদিন পর সুস্মিতা ও শুভজিতের মধ্যে এই সব ব্যাপার নিয়ে চরম ঝামেলার সৃষ্টি হয়। এই মাসের গোড়ায় সুস্মিতার কিছু বান্ধবী তাকে জানায় সুস্মিতার কিছু অশ্লীন ছবি ফেসবুকে আপলোড করা হয়েছে। বান্ধবীদের মুখে এই সব কথা শুনে সুস্মিতা অবাক হয় ও ভেঙে পড়ে। ফেসবুক ঘেঁটে সুস্মিতা দেখে তার নামে জাল প্রোফাইল খোলা হয়েছে। সুস্মিতা শুভজিৎ কে ফোনে এ সব কথা বলতেই শুভজিৎ কথাগুলি অস্বীকার করে। অন্যদিকে সুস্মিতা নিজের কিছু অশ্লীন ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্মুখে আসতেই সে তার প্রোফাইল টি ব্লক করে দেয়। এরপরে সুস্মিতা চরম বিষাদের তাড়নায় গলায় ওড়না দিয়ে আত্মহত্যা করে। মৃত ছাত্রীর বাড়ি নদিয়ার পুরাতন চাপড়া এলাকায়। সুস্মিতার পরিবার ধানতলা থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার জন্য অভিযোগ দায়ের করেছে শুভজিতের বিরুদ্ধে। আপাতত অভিযুক্ত যুবকটির কোনো পাত্তা পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ অবশ্য নিজেদের তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। শুভজিৎ নদিয়ার ঘোলা এলাকার ছেলে। তবে এও জানা গেছে, শুভজিতের মামার বাড়ি নেপাল সীমান্ত এলাকায়। শুভজিৎ কি সেখানে গিয়ে লুকিয়ে আছে। তা জানার জন্য জোরদার তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ বিভাগ। অন্যদিকে মেয়ের মৃত্যুতে সুস্মিতার মা, বাব ভীষন ভাবে ভেঙে পড়েছেন। এলাকাবাসীও এই মর্মাহত ঘটনায় শোকস্তব্ধ।