অনন্যা রায়ঃ- মুখে খালি বড় বড় কথা আর কথায় কথায়, বারে বারে নিজেকে “খাটি বাঙালী” ‘বর্ধমান জেলার মানুষ’ প্রমান করার চেষ্টা। কিন্তু, কাজের বেলায় ভোকাট্টা সর্দারজি! হ্যাঁ, ইনিই সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। ইনিই নাকি আবার বর্ধমানের সাংসদ। বাইনোকুলার চোখে দিয়েও তার দেখা মেলে না। বর্ধমানের দুঃখ, যন্ত্রনার সাথে সর্দারজির অত লেনা – দেনা নেই। লোকে বলে, সর্দার’রা বিপদে নাকি কখনো পিছু হঠে না, এর সাংসদ সর্দারের টিকি’ও খুঁজে পাওয়া গেল না, যখন ঐতিহ্যবাহী শতাব্দী প্রাচীন আস্ত রেল ভবনটাই ভেঙে পড়ল! লোকে এখন বলাবলি করছে – ‘এ কেমন সাংসদ? এ কেমন সর্দার?’
বর্ধমানে ছুটে আসা তো দূর, দিল্লির গদি তে বসে আলটপকা বলে বসলেন, “এর পেছনে অন্তর্ঘাতও থাকতে পারে!!” কেন? কি দেখেই বা ওনার এরকম মনে হল? নাকি স্রেফ বাজার গরম করতে, বা বিজেপি’র কৌশলগত কায়দায় মূল বিষয় থেকে নজর ঘোরাতে ওনার এমন বচন! আবার উনি এমন কথাও বলেছেন, “আমি হাওড়ার ডি.আর.এম.কে ঘটনাস্থলে যেতে বলেছি”। বি-রা-ট কাজ করলেন উনি। তা ছাড়া, ডি.আর.এম.কে ঘটনাস্থলে যেতে বলার উনি ই বা কে?
উনি যখন দার্জিলিঙের সাংসদ, তখন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় তার দেখা না পেয়ে মিসিং ডায়েরী করেছিলেন সেখানকার এক বাসিন্দা। সেটা ২০১৯ এ ভোটের সময় বেশ প্রচারেও এসেছিল।
বর্ধমান রেল স্টেশন ভেঙে পড়া একটি দীর্ঘ সূত্রী অবজ্ঞা, ফাঁকিবাজি আর ওপর-ওপর চাকন চিকন করে টাকা লোটার যে ধান্দাবাজি, তার কুফল। একে অস্বীকার করা যায় না। সাংসদের কাজ অবশ্যই ঘরবাড়ি পলেস্তরা করা নয়। সে ক্ষেত্রে এই ঘটনার জন্য আলুওয়ালিয়া দায়ী, এমন ভাবারও কোনো কারন নেই। কিন্তু, সাংসদ হিসেবে, রেলের অপদার্থতা, ফাঁকিবাজিতে লাগাম পরানোর দায় অবশ্যই তার। এই জন্যই সাংসদ, বিধায়কদের দরকার সংসদীয় গনতন্ত্রে। ভোট জিতে পাড়ায়, পাড়ায় ‘প্রভূ’ বানানোর জন্য এ সব পদের কোনো প্রয়োজন নেই।
এখন একজন সাধারন মানুষের জীবনে পেঁয়াজ কেনা থেকে শুরু করে, রেলের টিকিট কাটা পর্যন্ত একজন সাংসদের যে ভূমিকা, তা আলুওয়ালিয়াদের জন্য সুখকর হবে না। ‘খামোখা’ একটি সাংসদ নিয়ে লোকে কি করবে? সর্দারজি’র ঠিক আগেই ডাঃ মমতাজ সংঘমিতা সেটা অলরেডি প্রমান করেছেন, সংগঠিত ছকে, কৌশল করে খেললে, হাসতে হাসতে ছক্কা মেরে, যাকে তাকে ওইসব আদুরে পদে বসিয়ে দেওয়া যায়। যে বসে, লোকের ভালমন্দে তার কোনো দায় নেই, আবার কে বসল, তা নিয়ে লোকেরও অত মাথাব্যথা নেই!