সায়ন্তী সাধু, দুর্গাপুরঃ- মার্চে লকডাউনের গোড়া থেকে করোনা-ত্রাসে শুনশান ছিল দুর্গাপুর শহরের পথ-ঘাট, অফিস-কাছারি থেকে রেস্তোরা, বানিজ্যিক ভবন। ভয়ে কাঠ হয়ে ছিল শিল্পশহর। আনলক শুরু হতেই দ্রুত লাগামছাড়া দুঃসাহসে খানিকটা বেপরোয়া উচ্ছাসে যেন বাঁধনখোলা ভাব ছড়িয়েছে সর্বত্র। আর তার-ই কুফল মিলছে ইতি-উতি। শহরের রাজনৈতিক নেতা থেকে আমজনতা- সবার মনে ধীরে ধীরে ফিরছে ভয়। সরকার বলছে, ভয় নয়।করোনাকে জয় করুন। কিন্তু জয়ের পথে হাঁটতে গিয়েই কি হোঁচট খাচ্ছে না দুর্গাপুর?
“করোনাই কেন শুধু- সব ভয়কে জয় করেই ফিরতে হবে জীবনে। এটাই রীতি মানবজীবনের। করোনা ভাইরাসকে সবসময় মাথায় নিয়ে চললে চলাফেরা করলে থেমে যাবে সবকিছু। তাই বলব,- ভয় নয়, সাবধানে থাকুন। সতর্ক থাকুন” বললেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি তরুন রায়।
“ডাকাবুকো থাকাটা যৌবনের উচ্ছলতা। অত্যন্ত দরকারি। তা বলে বেপরোয়া, বাহ্যজ্ঞানহীন থাকাটা কাম্য নয়। এ রোগে যতজন মারা যাচ্ছে, তার চেয়ে সুস্থ হচ্ছে বেশি। তাই বলব, সাবধানের মার নেই,” বক্তব্য তৃনমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি জীতেন্দ্র তেওয়ারি’র। তিনি বললেন, “বিশেষ করে অনেকে পাবলিক কনট্যাক্টে যাচ্ছেন, তাঁরা সচেতন থাকুন। সব রকম সাবধানতা বজায় রেখে চলুন। কোন ভয় নেই”।
“নাই, নাই ভয়, হবে-হবে জয়”-কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই অভয়বাণীকে সামনে রেখে পথ চলার নিদান দিলেন বিজেপি নেতা ও আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর কথায়, “আমরা ভারতীয়রা লড়তে জানি। তাই এই অজানা, অদেখা শত্রূর সাথে আমাদের এই অসম লড়াই-এ জিতব শেষে আমরা-ই।
কি বলছেন সিপিএমের জেলাস্তরের নেতারা? পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায় বললেন,” কি কেন্দ্র, কি রাজ্য, গোড়া থেকে আরও বেশি সচেতন থাকলে আমাদের অবস্থা এতটা বাড়াবাড়ি হত না। “তার কথায়, “রাজ্যের বেশ কিছু জেলা, এমনকি খোদ কলকাতার চেয়েও আমাদের অবস্থা বেশ ভালো ছিল। তবে, দুর্গাপুরের মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকেরাও যখন আক্রান্ত হচ্ছেন, তখন ভাবার বিষয়। মানুষকে আরও অনেক বেশি সচেতন, সাবধান হতে হবে। শুক্রবার দুর্গাপুরের মহকুমা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিকের কোভিড-১৯ পসিটিভ হওয়ার পর শহর জুড়ে অল্প হলেও ফিরেছে আগের ভয়। অফিস-কাছারি সোমবার পর্যন্ত বন্ধ। শহর এখন চিন্তায় ভ্রূ কুঁচকে কারন দফতরের যে ৫০ জন আধিকারিক- কর্মীর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তাঁদের কেও আবার পজিটিভ নন তো?