দুর্গাপুরের স্বনামধন্য চিকিৎসকের পুত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু, শোকের ছায়া শিল্পাঞ্চলে

22411

এই বাংলায় ওয়েব ডেস্কঃ- দুর্গাপুরের স্বনামধন্য চিকিৎসক জনার্দন খামারুর জেষ্ঠ পুত্রের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া শিল্পাঞ্চলে। ধানবাদে মামার বাড়িতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে মৃত্যু হয়েছে চিকিৎসক জনার্দন খামারুর জেষ্ঠ পুত্র সোহম খামারুর (২৫)। ওই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সোহমের সঙ্গে তাঁর ডাক্তার দম্পতি মামা মামি সহ আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে সরস্বতী পুজো উপলক্ষ্যে মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন সোহম। দুর্গাপুরের প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টার এর কমার্শিয়াল কমপ্লেক্সে ‘মেডিস্ক্যান’ নামক একটি আল্ট্রা সোনোগ্রাফি কেন্দ্রের প্রধান ডাক্তার জনার্দন খামারুর জ্যেষ্ঠ পুত্র সোহম খামারু ।

প্রসঙ্গত ধানবাদ শহরের ব্যাঙ্ক মোড় থানা এলাকায় টেলিফোন এক্সচেঞ্জ রোডে চিকিৎসক জনার্দন খামারুর শ্যালক ডাঃ বিকাশ হাজরা ও তাঁর স্ত্রী ডাঃ প্রেমা হাজরার একটি হাসপাতাল রয়েছে। চার তলা বিশিষ্ট এই হাসপাতালের উপরেই বসবাস করতেন ওই ডাক্তার দম্পতি। শুক্রবার মাঝরাতে হঠাৎই আবাসনে আগুন লাগে। দ্রুত সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে দমকল বাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর হাসপাতালের উপরে অবস্থিত চিকিৎসক দম্পতির আবাস স্থল থেকে ছটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতদের মধ্যে চিকিৎসক দম্পতি ডাঃ বিকাশ হাজরা ও তাঁর স্ত্রী ডাঃ প্রেমা হাজরা তাদের ভাগ্নে সোহম খামারু, পরিচারিকা সহ তিন জনের দেহ উদ্ধার হয়। এর পাশাপাশি ওই অগ্নিকাণ্ডে চিকিৎসক দম্পতির পোষ্য দুইটি কুকুরর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রামথিকভাবে মনে করা হচ্ছে আবাসনের স্টোররুমে আগুন লেগেছিল। আগুনের ধোঁয়া আবাসনে ছড়িয়ে পড়লে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় সকলের বলে অনুমান।

যদিও এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের কোনও ক্ষতি হয়নি। হাসপাতাল কর্মীরা দ্রুত রোগীদের স্থানান্তরের ব্যবস্থা করে। জানা গেছে অগ্নিকাণ্ডের সময় হাসপাতালে ২৫ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। ওই দুর্ঘটনার পর হাসপাতালটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। বিশিষ্ট ওই চিকিৎসক দম্পতির এই মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটনায় টুইট করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন খোদ ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। পাশাপাশি এই ঘটনায় কোনও গাফিলতি রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। তার জন্য মৃতদেহগুলির দু’দুবার ময়নাতদন্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনা প্রসঙ্গে ধানবাদের এএসপি (গ্রামীন) রিষ্মা রমেশন জানিয়েছেন প্রাথমিকভাবে স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত শুরু করলেও আগামী কাল রাঁচী থেকে বিশেষ ফরেন্সিক টিম আসবে পুরো ঘটনার তদন্তের জন্য।

অন্যদিকে মর্মান্তিক ওই ঘটনার খবর পেয়েই ধানবাদে ছুটে গেছেন চিকিৎসক জনার্দন খামারু ও তাঁর পরিবার। বর্তমানে ধানবাদেই রয়েছেন শোকাতুর চিকিৎসকের পরিবার। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে ডাক্তার পুত্রের এহেন মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছাতেই গোটা শিল্পাঞ্চল জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে । দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীতে ছোট থেকে বড় হওয়া এই ডাক্তার পরিবারের সঙ্গে বহু মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মেল বন্ধন রয়েছে বলে জানা গেছে। ডাক্তার পরিবারের এই দুঃখের সময়ে গোটা শিল্পাঞ্চলবাসী তাদের পাশে রয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দারা। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে মৃতদেহগুলি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হলে আগামী কাল পুত্র সোহমের দেহ নিয়ে শহরে ফিরবেন খামারু দম্পতি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here