এই বাংলায় ওয়েব ডেস্কঃ- হিন্দু শাস্ত্র মতে শ্রী শ্রী নারায়নের চার ধাম এর মধ্যে পুরীধাম অন্যতম। হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে পুরী জগন্নাথ মন্দির এক অন্যতম তীর্থ ক্ষেত্র। কথিত আছে কলিযুগের অবতার শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেব। সারা পৃথিবী থেকে মানুষ আসেন পুরীর শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দির দর্শন করতে। কিন্তু সারা পৃথিবী জুড়ে মারণ রোগ করোনা ভাইরাসের দাপটে বেশ কয়েকদিন হলো পুরীর মন্দিরে তীর্থ যাত্রীদের জন্য অবাধ প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন যাতে এই ভাইরাসের হাত থেকে পুরীর সমস্ত জন সাধারণ ও শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেব দর্শন করতে আসা সমস্ত তীর্থ যাত্রীদের করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা করা যায়। পুরীর শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেব মন্দির নিয়ে অনেক কথা প্রচলিত আছে যার অন্যতম হলো পুরীর মন্দিরে উড়তে থাকা বিশাল ধ্বজা বা পতাকাটি। কথিত আছে বা বলা হয় পতাকাটি নাকি বায়ু প্রবাহের উল্টো দিকে প্রবাহিত হয় বা উড়তে দেখা যায়। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের চুরায় উড়তে থাকা পতাকাটির আরেক নাম পতিত পাবন। পুরীর মূল মন্দিরে প্রতিদিন পতাকা লাগানো হয়। বৃহস্পতিবার রাত ন’টা নাগাদ আগুন লেগে যায় পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের চূড়ায় উড়তে থাকা ধ্বজা বা পতাকাটি। নীল চক্রের উপর অবস্থিত এই ধ্বজাতে বৃহস্পতিবার রাতে আগুন দেখতে পায় সাধারণ পুরি বাসিন্দারা। প্রতিদিনই ধ্বজাটিকে পরিবর্তন করা হয় এবং ঠিক তার তলাতেই দেওয়া হয় একটি করে প্রদীপ। এ দিন একাদশী থাকায় বিশালাকৃতি চক্রের সামনে প্রদীপ দেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে মন্দির কমিটির অনুমান সম্ভবত মন্দিরে পতাকার নিচে থাকা প্রদীপ থেকেই ধ্বজাটিতে আগুন ধরে গিয়েছে । গত কালকেও ঠিক সেই রকম ভাবেই পতাকা পরিবর্তনের পর প্রদীপ জ্বালিয়ে নেমে আসেন মন্দির কমিটির লোকজনেরা । কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই দাউ দাউ করে জ্বলতে দেখা যায় মন্দিরের ওপরে থাকা সেই সুবিশাল পতাকাটিকে।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ইতিহাসে এই প্রথম বার ঘটল এমন দুর্ঘটনা পুরীর মন্দিরের উপরে নীল চক্র অবস্থিত আছে তার গা বেয়ে উড়তে থাকে সেই সুবিশাল ধ্বজা বা পতাকাটি। আগুনের জেরে অষ্টধাতুর দ্বারা নির্মিত নীল চক্রটি সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়ে যায়। মন্দির কমিটির লোকজনেরা কিছুক্ষণের চেষ্টাতেই আগুন আয়ত্তে আনে কিন্তু তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় বিশেষজ্ঞদের মতামত। পুরী জগন্নাথ মন্দিরের পূজারীদের মধ্যে দুশ্চিন্তা ও ভীতির সঞ্চার করে এই ঘটনা। তাদের বিশ্বাস করোনা ভাইরাস এর মতন আবার কোনো বড় বিপদের অশনি সংকেত দিতেই এই ঘটনা ঘটেছে পুরী মন্দিরের। পণ্ডিতেরা জানিয়েছেন প্রথমবার এমন ঘটনা ঘটায় তারা আতঙ্কিত। শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের মন্দিরে এই রকম ঘটনা প্রথমবার ঘটল। এই ঘটনার জেরে সম্ভবত শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেব তাদেরকে কোন বড় বিপদের সংকেত দিয়েছেন বলে মনে করছেন। যদিও পুরী মন্দিরের ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বে যারা আছেন তারা এটি নিছক একটি দুর্ঘটনা বলে জানিয়েছেন। কিন্তু সাধারণ হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষেরা এই ঘটনাকে সামনের কোন বড় বিপদের অশনি সংকেত বলে মনে করে ভীত-সন্ত্রস্ত আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।