শান্তনু পান, পশ্চিম মেদিনীপুর:– ফের ভয়াবহ বন্যার কবলে ঘাটাল। একদিকে ঝুমি নদী, অন্যদিকে শিলাবতী। সেই সঙ্গে ডিভিসি থেকে জল ছাড়ায়, ঘাটালের মনশুকায় ঝুমী নদীর জল বেড়ে প্লাবিত দীর্ঘগ্রাম সহ বেশ কিছু গ্রাম।
ডিভিসি ফের জল ছাড়ায় বুধবার সকাল থেকেই ঝুমী নদীর জল বাড়তে থাকে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে খড়ার থেকে মনসুকা সড়ক যোগাযোগ। রাস্তার উপর দিয়ে বইছে ঝুমী নদীর জল। ঝুমি নদীর জলে দীর্ঘগ্রাম, পার্বতীচক, প্রসাদচক, ইড়পালা, সহ বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত। আবারও ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি ঘাটালের মনসুকা ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
অন্যদিকে, একটানা বৃষ্টির ফলে শিলাবতী নদীর জল এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। যেকোনো সময় নদীর বাঁধ ভেঙ্গে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দলুই বলেন ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ঘাটাল ব্লকের ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত সম্পূর্ণ জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে। ঘাটাল পৌরসভা ১৭ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২ টি ওয়ার্ড জলে ডুবে রয়েছে।
বিভিন্ন জায়গায় মানুষ নৌকায় যাতায়াত করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় নৌকার সংখ্যা খুবই কম। ঘাটাল মহকুমা প্রশাসন, ঘাটাল পৌর প্রশাসন একযোগে বন্যা কবলিত এলাকায় দুর্গত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার দেওয়ার পাশাপাশি ত্রিপল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রচুর মাটির বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় দুর্গত মানুষদের উদ্ধার করে নিয়ে এসে ত্রাণশিবিরে রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, প্লাবিত এলাকায় পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে । ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। তবে পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বিডিও অফিসে এবং মহকুমা অফিসে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ২৪ ঘন্টা পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই ঘাটালে এসেছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সমগ্র এলাকা পরিদর্শন করে তিনি জানান, ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে।