eaibanglai
Homeএই বাংলায়করোনা সচেতনতার মধ্য দিয়ে পীর বাবার ঊরসে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের...

করোনা সচেতনতার মধ্য দিয়ে পীর বাবার ঊরসে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ মেতে উঠলো

সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ- এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে মাথাব্যথার কারণ নোবেল করোনা ভাইরাস। সরকার ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা জারি করেছেন কোথাও কোনরকম জমায়েত করা যাবে না। তবে করোনা সম্পর্কে সচেতন হয়ে এবং প্রশাসনিক অনুমতি নিয়ে হিন্দু-মুসলিম একত্রে অনুষ্ঠানে মেতে উঠলো। “এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান হিন্দু তার নয়ন মনি মুসলিম তার প্রাণ” কবিতার এই লাইন আজও আমাদের মনের মনি কোঠায় রয়ে গেছে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে চিট ধরানোর চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। কিন্তু তার পরেও হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ একে অপরের জন্য কতটা করেন, তাদের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্ব পূর্ণ সম্পর্ক ফুটে উঠল আমাদের ক্যামেরায়। বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস ব্লকের করিশুন্ডা অঞ্চলের সিমুলিয়া ও দশরথবাটি গ্রামে পীরবাবার ঊরস পালন হল। সিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ৮৫ বছর বয়সী আনন্দময় মেদ্যা বলেন এই পীরবাবার বয়স হবে ৮০০ বছর। তিনি আরো জানান যে অন্য জায়গা থেকে এসে আমাদের গ্রামে থাকতেন। ওরস কমিটির সম্পাদক শম্ভুনাথ নন্দী বলেন যে এই গ্রামে রীতি আছে কোন হিন্দু ছেলের বিয়ে হলে বাড়িতে ঢোকার আগে পীরবাবার আস্তানায় প্রসাদ খাওয়াতে হয়। যতক্ষণ না খাদিম প্রসাদ বিতরণ না করছে ততক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। উনি এসে প্রসাদ দেন তারপর ছেলে-বউ বাড়িতে ঢুকে। ওরস কমিটির সভাপতি আব্দুর রব বলেন ৪ বছর এই পীরবাবার ওরস পালন পালন করা হচ্ছে। হিন্দু মা-বোনেরা প্রতি বৃহস্পতিবার পীরবাবার আস্তানায় হাজির হয়ে যায় প্রসাদ নিয়ে। প্রতি দিন সন্ধ্যায় ধূপ ও সন্ধ্যা দেওয়ার লাইন পড়ে। সকল মানুষের সহযোগিতায় এই উৎসব পালন করা হয়। সিমুলিয়া গ্রামের রানু নন্দী বলেন পীরবাবাকে মনে-প্রানে ভালোবাসি। গ্রামের বাহিরে বের হলেই ওনাকে প্রনাম না করে যায় না। এই উৎসব মিলন মেলায় পরিনত হয়। বয়স্ক মানুষদের সকাল বেলায় সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। চন্দনের ফোঁটা ও মিষ্টির প্যাকেট দেওয়া হয়। দুটার সময় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক ছেলে ও মেয়েদের সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। তারপর বিকালে পীরবাবার মাজারের চাদর মাথায় নিয়ে গ্রাম পরিক্রমা করা হয়। এই গ্রাম পরিক্রমায় অংশ গ্রহণ করে আট থেকে আশি সাধারণ মানুষেরা। সন্ধ্যায় পীরবাবার মাজার স্নান করানো হয়। রাতে ধর্মীয় কথা আলোচনা করা হয় এবং শেষে ৭ থেকে ৮ হাজার মানুষ খেচুরি প্রসাদ খায়। এই উৎসবে মেলা বসে এবং রাতে কাওয়ালী অনুষ্ঠান হয়। এই মুহূর্তে করোনা আতঙ্ক গোটা বিশ্বের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সে কারণে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে এখানে সর্তকতা অবলম্বন করা হয়েছে। এখানে যারা আসছেন প্রত্যেককে হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে হাত ধুয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সকলে মাস পরে রয়েছেন। তাদের এই সচেতনতা সকল সাধারণ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments