নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুরঃ- করোনা ভাইরাস ঠেকাতে দেশ জুড়ে সর্তকতা জারি হয়েছে। এ রাজ্যে, তথা জেলায় জেলায় সতর্কবার্তা দিয়েছেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো পুরসভা গুলি ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলি ইতিমধ্যেই জোর প্রচার চালাচ্ছে রাজ্য জুড়ে। দুর্গাপুর শহরে ইতিমধ্যেই গড়ে উঠেছে একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড। দুর্গাপুরের মহকুমা হাসপাতালের যাত্রী প্রতীক্ষালয় কেই আপাতত অস্থায়ী আইসোলেশন ওয়ার্ড হিসেবে চালু করা হয়েছে। রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি কে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ করার আদেশ জারি করেছেন। এবার করোনা ভাইরাস এর আতঙ্কে ইস্পাত নগরীর খেলার মাঠ গুলিতে। ইতিমধ্যেই দুর্গাপুর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার একটি নোটিশ জারি করে সমস্ত রকম খেলা বন্ধ রাখার কথা বলেছে। সিএবি ও বর্ধমান জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্দেশ অনুসারে খেলা বন্ধ করা হয়েছে। এর জেরে দুর্গাপুর মহকুমা আপাতত ক্রিকেট লিগ, মহিলা ফুটবল লিগ, বাস্কেটবল লিগের চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলা স্থগিত হয়ে গেল পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত। সমস্ত রকম খেলাধুলা আপাতত বন্ধ থাকবে বলে জানা গেছে। দুর্গাপুর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত তানসেন অ্যাথলেটিক ময়দানে ভলিবল খেলা হওয়ার কথা ছিল কিন্তু করোনা ভাইরাস এর দাপটে সেটি আপাতত বন্ধ রাখা হলো। ইতিমধ্যেই জেলার সমস্ত ক্রীড়া দপ্তর থেকে সমস্ত রকম কোচিং ক্যাম্প বন্ধ করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে সাথে করনা ভাইরাসের আতঙ্কে বাস যাত্রী কমেছে শিল্পাঞ্চলে। দুর্গাপুর, আসানসোল মিনিবাস পরিষেবায় তার জোর প্রভাব পড়েছে। গত বেশ কয়েকদিন যাত্রী পরিবহনের সমীক্ষা করে দেখা গেছে মিনিবাসে প্রায় ২৫ শতাংশ যাত্রী কমে গেছে। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল জুড়ে প্রায় ৭০ টি মিনিবাস চলাচল করে তার মধ্যে কয়েকটি বাস খারাপ থাকলেও বাকি যে ক’টি বাস রাস্তায় চলাফেরা করছে সেই বাসের যাত্রী হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে। মিনি বাস মালিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে করোনা আতঙ্ক গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো কাজ করছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির বন্ধ রাখার আদেশে পড়ুয়ারা আর কোনোভাবেই বাস ব্যবহার করছেন না। পরিস্থিতি এতটাই করুন যে মিনিবাসের যাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ায় মিনিবাস চালানো মিনিবাস মালিকদের পক্ষে দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু যে বাসের সমস্যা তা নয়, সমস্যা রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। যেমন দুর্গাপুরে রয়েছে একটি উপ সংশোধনাগার। সেই সংশোধনাগারে প্রায় ১৫০ জন বন্দি আছেন বিচারের আশায়। স্কুল-কলেজ বন্ধ হলো। কিন্তু এই সংশোধনাগার গুলিতে মানুষজনের আসা-যাওয়া লেগেই রয়েছে। তাই কতটা সুরক্ষিত সংশোধনাগার গুলি তা ভাবাচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। যে সমস্ত বন্দীদের হাঁচি, সর্দি, জ্বর, কাশি হয়েছে তাদের কে বাড়তি নজরদারি দেওয়া হচ্ছে। উপ সংশোধনাগারের কর্তৃপক্ষ, রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ মেনে বন্দীদের ওপর নজর রাখাচ্ছে। বলা বাহুল্য যে রাজ্যের সমস্ত সংশোধনাগার গুলি এমনিতেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে থাকে। সেই পরিবেশ যাতে দ্রুত স্বাস্থ্যকর ফিরিয়ে আনা যায় তার চেষ্টা করা হচ্ছে। চৈত্র মাস পড়ে যাওয়ায় বাঙালি বা হিন্দু ধর্ম অনুসারে কোন বিবাহ বা শুভকর্ম অনুষ্ঠান এই সময় নেই। তাই মানুষের জড়ো হওয়ার জায়গাও কম থাকবে এই আশায় বুক বাঁধছে শিল্পাঞ্চল বাসি। সবাই চেষ্টা করছেন যতটা বাড়িতে থাকা যায় বাইরে যাতে বেশি বেরোতে না হয়। দুর্গাপুর শহরে রেলওয়ে স্টেশনে বিভিন্ন রাজ্য থেকে মানুষজন আসছেন। দুর্গাপুরের নগর প্রশাসন কতটা প্রস্তুত, যে কোন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী এই রেলওয়ে স্টেশনের ভেতর দিয়ে আসছেন কিনা দুর্গাপুর শহরে তার নজরদারির প্রয়োজন আছে। দুর্গাপুর বাস স্ট্যান্ড ও সিটি সেন্টার বাস স্ট্যান্ড ও নজরদারির অভাব রয়েছে বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা বাস যাত্রীদেরকে পরীক্ষার কোনো বন্দোবস্ত নেই। হতে পারে যে সড়কপথেও কোন রোগী দুর্গাপুর শহরে প্রবেশ করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা তা সকলেরই এখনো অজানা।