eaibanglai
Homeএই বাংলায়বেআইনি নির্মান ভাঙতে গিয়ে জনতার বাধার মুখে পড়ল পুরসভা

বেআইনি নির্মান ভাঙতে গিয়ে জনতার বাধার মুখে পড়ল পুরসভা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কাটোয়া:- রবিবার সকালে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া শহরে এই ঘটনা ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। নির্মিয়মাণ একটি বাড়িতে কুয়ো কাটার সময় ধস চাপা পড়ে মৃত্যু হয়ই বিকাশ হাজরা(৪৩) নামে এক শ্রমিকের। কাটোয়ার ১১ ওয়ার্ডের দক্ষিণ পালপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে গত শনিবার। দীর্ঘ চেষ্টার পর চাপা পড়ে থাকা শ্রমিককে উদ্ধার করেন দমকলের কর্মীরা। দ্রুত কাটোয়া হাসপাতালে আনা হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। অনুমোদন ছাড়াই ওই বাড়িতে কুয়ো কাটার কাজ চলছিল। এমন কী পুকুর বুঝিয়ে পিলার তুলে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দাদের। সেই অভিযোগ নিয়ে পুরসভার কর্মীরা কাটোয়া শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার ঘোষহাটে পুকুরের জায়গা ভরাট করে বেআইনিভাবে নির্মিত বাড়ি ভাঙতে গেলে স্থানীয় মহিলারা শুয়ে পড়লেন পুরসভার গাড়ির সামনে। পুলিশকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ শুরু করেন উত্তেজিত জনতা। জনরোষের মুখে পড়ে শেষপর্য্ন্ত বাড়ি ভাঙার কাজ অসম্পুর্ণ রেখেই পিছু হটতে হয় পুরসভাকে। এদিন সকাল থেকে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। এই ঘটনায় পিছনে বিজেপির ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। যদিও বিজেপি অভিযোগ অস্বীকার করেছে।প্রসঙ্গত, কাটোয়ার ঘোষহাটে একটি পুকুরের ধারে নির্মীয়মাণ বাড়িতে শৌচাগারের চেম্বারের জন্য খাল কাটতে গিয়ে শুক্রবার বালি চাপা পড়ে মৃত্যু হয় বিকাশ হাজরা নামে এক শ্রমিকের। ওই ঘটনার পর বাড়ি মালিক রেবা ধারাকে শনিবার নোটিশ পাঠায় পুরসভা। পুরসভার পক্ষ থেকে বাড়িমালিককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে নির্মানকাজ বন্ধ রাখা হয়। বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁকে।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে রবিবার সকালে কাটোয়া পুরসভার স্যানিটারি অফিসার মলয় দাসের নেতৃত্বে পুরকর্মীরা ঘোষহাটে রেবা ধাড়ার বাড়ি ভাঙতে যান। সঙ্গে ছিল পুলিশবাহিনীও। সকাল ৭.১৫ মিনিট নাগাদ পুরপ্রতিনিধিরা ওই নবনির্মিত বাড়ির ছাদে উঠে ছাদটির একাধিক জায়গায় মেশিন দিয়ে ফুঁটো করে দেয়। যাতে বাড়িটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। রেবাদেবীর বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হতেই আশপাশের বাড়ির লোকজন জড়ো হতে শুরু করে। তারপর শুরু হয় বিক্ষোভ। পুরসভার ট্রাক্টরের সামনে শুয়ে পড়েন রেবাদেবী, তাঁর ছেলে সৌমেন ধাড়া-সহ পাড়ার কয়েকজন মহিলা। স্থানীয় বেশকিছু লোকজন জড়ো হয়ে শুরু হয় পুরনো কালনা-কাটোয়া সড়কপথ অবরোধ। স্থানীয়রা জানান, ঘোষহাটে চিত্তপুকুরের পাড়ে প্রায় ৪০টি নির্মাণ রয়েছে। সেগুলি সবই বেআইনি। সেগুলি সব একসঙ্গে ভাঙতে হবে। তবেই এই বাড়ি ভাঙতে দেওয়া হবে না বলে দাবি তোলেন স্থানীয়রা। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল দেবনাথ, অজয় দাসদের অভিযোগ, কাটমানি খেয়ে এই সমস্ত বেআইনি নির্মান করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। পুরসভা তখন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।পুরকর্মীদের পাশাপাশি পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ শুরু করে জনতা। খবর পেয়ে কাটোয়া থানার আইসি বিকাশ দত্তের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছায়। আইসি স্থানীয়দের দাবি বিবেচনা করে আলোচনার আশ্বাস দেন। তারপর সকাল প্রায় দশটা নাগাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পুলিশ জানায় ঘটনার পর বাড়িমালিক বেরা ধাড়ার ছেলে সৌমেন ধাড়াকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার তাদের বাড়িতে ধস চাপা পড়ে শ্রমিকের মৃত্যর ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অনিচ্ছকৃত খুনের মামলা রুজু করা হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। কাটোয়া পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ,” বিজেপি একদিকে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে আন্দোলন করছে। আবার ওরাই লোকজন জড়ো করে বেআইনি নির্মাণ ভাঙাতে বাধা দিচ্ছে। তবু আমরা ওই বাড়িটির ছাদ ভেঙে দিয়েছি। পরে আশপাশের বেআইনি নির্মাণগুলিও ভাঙা হবে।”বিজেপির পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির(গ্রামীণ) সাধারণ সম্পাদক অনিল দত্ত বলেন, ”পুরসভায় আমরা ক্ষমতায় নেই। ছিলামও না। তৃণমূলের নেতারা কাটমানি খেয়ে বেআইনি নির্মানের সুযোগ করে দিয়েছে। সকলেই সেটা বুঝতে পারছেন।”

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments