সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী)ঃ– এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটা মানুষই বিয়ে করার নিয়ে নানান রকম স্বপ্ন দেখেন। বিয়ের আগে বৈবাহিক জীবন এবং স্বামী সংসার নিয়ে অনেক রকম স্বপ্ন মনের মধ্যে সাজিয়ে ফেলেন কিন্তু সেই স্বপ্নগুলো যখন বাস্তবে রূপায়ণ হয় না তখন সেই ব্যক্তির মধ্যে মানসিক কষ্ট, যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়, যা থেকে ধীরে ধীরে হতাশা বোধ তৈরি হয় এবং তা মানুষকে ধীরে ধীরে গ্রাস করে নেয়। এখন কেউ বলতে পারে প্রত্যেকটা মানুষই তো বিয়ে করে সুখী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন এটাই তো স্বাভাবিক! তার উত্তরে বলতে হয় আমাদের সনাতন ধর্মে কিন্তু বিয়ে করার একটি আসল উদ্দেশ্য আছে আর যে উদ্দেশ্যটি অত্যন্ত মহৎ।
মনে করে দেখবেন স্ত্রীকে বলা হয় সহধর্মিনী, সহধর্মিনী অর্থাৎ যে স্ত্রী তার স্বামীকে ধর্ম পথে চলতে সহায়তা করে সেই সহধর্মিনী। যেমন রাবণ পত্নী মন্দোদরী রাবণ বিপথে গেলে প্রতিমুহূর্তে তাঁর স্বামীকে ন্যায় ও শাস্ত্রের কথা স্মরণ করিয়ে এবং তাঁর অন্যায়ের বিরোধিতা করে স্বামীকে সঠিক পথে আনবার চেষ্টা করেছেন, এই কারণে মন্দোদরীকে পঞ্চ সতীর মধ্যে এক সতী রূপে আখ্যায়িত করা হয়।
সনাতন ধর্মে বলা হয় বিয়ে করার উদ্দেশ্য হলো এটাই যে, স্বামী একা ভগবানের সেবা করতে না পারলে তিনি বিবাহ করেন যাতে তাঁর সহধর্মিনী তাঁকে ধর্মপথে সাহায্য করেন এবং ভগবানের সেবা করতে সহায়তা করেন অর্থাৎ স্বামী স্ত্রী দুজনে মিলে যাতে ভগবানের সেবা করতে পারেন ধার্মিক জীবন যাপন করতে পারেন এবং ভক্তিপথে উন্নীত হতে পারেন। যা ন্যায় তাই ধর্ম। সততা,অহিংসা,নির্লোভ জীবন যাপনও ধর্মের রূপ। তাই লোভ নয় নির্লোভ অহিংস সৎ ভক্তিময় জীবনযাপন করার উদ্দেশ্যে যদি কেউ বিবাহ করেন, তবে তাঁর জীবনে হয়তো বাধা আসবে সংকট আসবে কিন্তু তিনি ভেঙে পড়বেন না, কারণ ভক্ত মাত্রই জানেন দুঃখ হলো ভগবানের কৃপার দান, দুঃখ দিয়ে ভগবান ভক্তকে স্মরণ করান, এই জগতে যাকে তুমি আপনার ভাবছো সেও তোমার আপন নয়, মৃত্যু তাকেও ছিনিয়ে নিতে পারে, একমাত্র আমিই তোমার আপন। তাই তুমি সময় থাকতে আমার শরণাপন্ন হও। একজন ভক্ত তাই সর্বদা হাসিখুশি এবং সন্তোষ ভাবাপন্ন হয়ে থাকেন।