এই বাংলায় ওয়েব ডেস্কঃ- পবিত্র ঈদের দিনে যখন মানুষ আনন্দে মেতে উঠেছেন ঠিক সেই সময় নিঃশব্দে মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন মালদার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আইপিএস হোসেন মেহেদী রহমান। মাত্র ৩১ বছর বয়সে হোসেন মেহেদী রহমান এখন মালদা জেলার এক বিখ্যাত নাম। দক্ষিণ দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ থানা এলাকার ডালিমগাঁও এর প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক মুজিবর রহমানের পুত্র হাসান মা-বাবার ইচ্ছা অনুসারে ২০১২ সালে এমবিবিএস ডিগ্রী হাসিল করেন। তারপর লখনৌ মেডিকেল কলেজ থেকে এমডি করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি খুব মেধাবী ও প্রতিভাবান ছিলেন তাই তার বাবা মা তাকে কার্শিয়াং এর একটি কনভেন্ট বোর্ডিং স্কুলে রেখে পড়াশোনা করিয়েছিলেন। ডাক্তারি পাশ করার পরও হোসেনের মনের ভেতর একটি ইচ্ছা জেগে যায় যে তাকে মানবসেবার আরেকদিকে নিয়োজিত হতে হবে। তাই তিনি ইউ.পি.এস.সি পরীক্ষায় বসেন এবং প্রথমবারে পাশ করে যান। ২০১৬ সালের আই.পি.এস ব্যাচে তিনি বেঙ্গল ক্যাডার হিসেবে ব্যারাকপুরে যোগদান করেন। পরে তাকে মালদা সদর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয় ।
সারা রাজ্যে যখন করোণা আতঙ্কে মানুষজন গৃহবন্দি ও দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তখন উর্দি পরা এই পুলিশ অফিসারটি তার গলায় স্টেথোস্কোপ টাঙ্গিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে পুলিশকর্মীকে সেবা দেওয়ার উদ্দেশ্যে। তার নিজের পুলিশ প্রশাসনের কর্মীদের মধ্যে করোণা আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রায় ২৫০ জন । সেইসব করোনা আক্রান্ত পুলিশকর্মীদের কে একটি আলাদা আইসোলেশন করে তাদের চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত নিজের হাতে করেছেন পুলিশ সুপার হোসেন মেহেদী রহমান। তার চিকিৎসার পেয়ে দ্রুততার সাথে সুস্থ হয়ে ওঠেন করোনা আক্রান্ত পুলিশ কর্মীগণ।
শুধু যে করোণা কালে তিনি চিকিৎসা করছেন তা নয় সারাবছর ধরে যে কোনো মানুষই তার কাছে রোগী হিসেবে গেলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে ওষুধ প্রেসক্রিপশন করে দেন। গোটা মালদা জেলার পুলিশ এইরকম এক চিকিৎসক পুলিশ অফিসার কে পেয়ে নিজেদেরকে গর্বিত মনে করেন । মালদা জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন যে এই পুলিশ অফিসার পেয়ে তারা তাদের এলাকায় করোনা আক্রান্ত মানুষজনের শুধু নয় গোটা জেলার মানুষের স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য পরিকাঠামো কে সাহায্য করার এক বিশাল সুযোগ পেয়েছেন। সাধারণ পুলিশ কর্মীদের জন্য তিনি একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবেই বেশি পরিচিত। এইরকম একজন মানুষের সাথে কাজ করতে পেরে তিনি নিজেকে আনন্দিত মনে করেন।
শুধু পুলিশ সুপার নয়, এলাকার সমস্ত রাজনৈতিক দলের লোকজন, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সমস্ত জেলাবাসী আজ হোসেনের এই কাজকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক নজির বলেও আখ্যা দিয়েছেন।