eaibanglai
Homeএই বাংলায়সাহিত্যচর্চা গোষ্ঠী 'সূচনা'-র উদ্যোগে কবি সম্মেলন হলো শিয়ালদহে

সাহিত্যচর্চা গোষ্ঠী ‘সূচনা’-র উদ্যোগে কবি সম্মেলন হলো শিয়ালদহে

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,কলকাতাঃ- সাহিত্যকে ভালবেসে ২০১২ সালের নভেম্বর মাস থেকে কার্যত একক প্রয়াসে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বিশিষ্ট কবিদের উপস্থিতিতে শুরু করেছিলেন সাহিত্য চর্চার আসর। প্রথম থেকেই বাহ্যিক আড়ম্বরের পরিবর্তে গুরুত্ব ছিল আন্তরিকতায়। তাকেই পাথেয় করে আজও এগিয়ে চলেছেন বেহালার পর্ণশ্রীর কবি, বাচিক ও অঙ্কন শিল্পী তথা নীরব সমাজসেবী নীপা চক্রবর্তী। সাহিত্যচর্চার জগতে পা রেখেছিল তার স্বপ্নের সাহিত্যচর্চা গোষ্ঠী ‘সূচনা’।

গত ২৩ শে এপ্রিল ‘সূচনা’-র উদ্যোগে শিয়ালদহ কৃষ্ণচন্দ্র ঘোষ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ভবনে আয়োজিত হয় সাহিত্যচর্চার আসর।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত প্রায় ৮০ জন কবির উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সঙ্গীত তথা বাচিক শিল্পী অন্তরা সিংহরায় ও মুকুল চক্রবর্তী। এরপর একে একে আবৃত্তি পাঠ, সঙ্গীত, নৃত্য পরিবেশন, সাহিত্য সম্পর্কে প্রবীণ সাহিত্যিকদের মননশীল আলোচনা অনুষ্ঠানটিকে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। অনুষ্ঠানে সমাপ্তি সঙ্গীত পরিবেশন করেন ‘চেতনা’র শিল্পীরা।

তবে সবকিছুকে ছাড়িয়ে যায় পটমঞ্জুরি গোষ্ঠীর দুই বিশিষ্ট শিল্পী অদিতি শীল ও বিপ্লব চক্রবর্তী পরিবেশিত শ্রুতিনাটক। ঠিক ছিল তারা একটিমাত্র শ্রুতিনাটক পরিবেশন করবেন। কিন্তু উপস্থিত কবিদের অনুরোধে তারা তিনটি শ্রুতিনাটক পরিবেশন করেন। বাধ্য হয়ে উদ্যোক্তারা হল কর্তৃপক্ষের কাছে অতিরিক্ত একঘণ্টা সময় চেয়ে নেন। বর্তমান যুগে সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে এটি এক বিরল ঘটনা।

এর আগে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে গলায় উওরীয় ও কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে উপস্থিত বিশিষ্ট অতিথিদের বরণ করে নেওয়া হয় । এছাড়া তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ফুলের তোড়া, স্মারক ও মানপত্র এবং বুকে এঁটে দেওয়া হয় ব্যাচ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কবি কমল দে সিকদার, সংগঠক সাকিল আহমেদ, কবি ও বাচিক শিল্পী নীলাচল চট্টরাজ, কবি জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়, ড. রজত মোহন রায়, কবি সুব্রত ভট্টাচার্য, তাপস সাহা, বায়ু সৈনিক ধ্রুবব্রত দত্ত, পশ্চিমবঙ্গ সাহিত্য মঞ্চের কর্ণধার ও সংগঠক চন্দ্রনাথ বসু, দীপশিখা চৌধুরী, শর্মিলা রায়, মিতা পাল, ‘সূচনা’র সভাপতি মহাশ্বেতা বন্দোপাধ্যায় সহ আরও অনেক বিশিষ্ট কবি।

প্রসঙ্গত ‘সূচনা’র কর্ণধার নীপা চক্রবর্তী যখন নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন তখন থেকেই অভিভাবকদের লুকিয়ে কবিতা লিখতে শুরু করেন। পরবর্তীকালে প্রায় তিন শতাধিক লিটল ম্যাগাজিন সহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তার কবিতা প্রকাশিত হলেও ছোট থেকে তার স্বপ্ন ছিল নিজস্ব একটি সাহিত্যচর্চা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করা। স্বামীর নীরব উৎসাহে সেই স্বপ্ন পূরণ হয় ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে। প্রথম থেকেই পাশে পেয়েছেন বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী সোনালী কাজী সহ বেশ কয়েকজন কাব্যপ্রেমীকে। তার দ্বিতীয় স্বপ্ন হলো নিজস্ব একটি সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করা। জানা যাচ্ছে আগামী নভেম্বর মাসে হয়তো তার দীর্ঘদিনের সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। ইতিমধ্যে প্রাথমিক কাজ প্রায় শেষ।

উপস্থিত কবিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নীপা দেবী বললেন – অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েও ২০১২ সাল থেকে কবি সম্মেলন করে চলেছি। আমার স্বপ্ন এই সাহিত্যচর্চার গ্রুপটি আগামীদিনে সকলের প্রেরণার কারণ হয়ে বাংলা সাহিত্যচর্চাকে বিশ্বের বাঙালি দরবারে পৌঁছে দিতে বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করুক। শুধু তাই নয় আগামী নভেম্বর মাসে যে পত্রিকা প্রকাশিত হতে চলেছে সেটা যেন বাঙালির ঘরে ঘরে পৌঁছে যায় এবং তাদের ড্রয়িংরুমে স্থান পায়।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments