বিশেষ প্রতিনিধি, কলকাতাঃ- একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের দেনার দায় সামলাতে গিয়ে এবার নিজেই দেউলিয়া হওয়ার পথে ‘জীবন বীমা নিগম (এল. আই. সি)’। রাষ্ট্রায়ত্ব এই বীমা সংস্থাটির দুরাবস্থার নেপথ্যে রয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকারের একের পর এক খামখেয়ালী নির্দেশ। যে নির্দেশের বলে, একের পর এক ঋনে সঙ্কট গ্রস্ত ব্যাঙ্কের শেয়ার হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে কিনতে বাধ্য হয়েছে এল. আই. সি।
২০১৮ তে মোদি সরকারের হকুমে ডুবতে বসা আই. ডি. বি. আই. তে ব্যাঙ্কের ৫১ শতাংশ শেয়ার কিনতে বাধ্য হল এল. আই. সি। মূলধন বিনিয়োগ হল ২১০০০ কোটি টাকা। অনাদায়ী ঋনের বোঝায় জর্জরিত আই. ডি. বি. আই. তে বিনিয়োগ হওয়া ওই মূলধন কার্যতঃ কর্পূরের মতো উবেই গেল। সরকারি ফরমানে ওই ব্যঙ্কে ফের মূলধন যোগাল এল. আই. সি। ঠিক তিন মাস পরই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের একটি রিপোর্ট জানাল- “আই. ডি. বি. আই আদৌ সরকারি ব্যঙ্কই নয়”। ব্যাঙ্কটি ২০১৯ র জুন অব্দি ৩৮০০ কোটি টাকা লোকসান করেছে, যার মধ্যে অনাদায়ী ঋনই হল ২৯ শতাংশ।
এরপরই কেন্দ্র এল. আই. সি কে বাধ্য করে ডুবতে বসা পাঞ্জাব ন্যাশান্যাল ব্যাঙ্কের শেয়ার কিনতে। যে ব্যাঙ্কের ৮০০০ কোটি টাকা লোপাট করে দেশ থেকেই উধাও হয়ে গেছে নীরব মোদি, মেহুল চোকসির মতো কালো কারবারিরা। এরপরই, “গোদের ওপর বিষফোঁড়া হল বিলগ্নীকরনে রুগ্ন, লোকসানে চলা রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থার শেয়ার সেই এল. আই. সি র ঘাড়েই চাপানো। এভাবে দিনে দিনে এল. আই. সি. কে ওরা মেরে ফেলছে। কোটি কোটি মানুষের ভবিষ্যতের সঞ্চয় নিঃশব্দে লুঠ করে নিচ্ছে”, অভিযোগ রাজ্য সিপিএম সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র’র।
প্রথম মোদি সরকারের আমলে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থার শেয়ার খরিদ করতে এল. আই. সি. কে ২২.৬ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছিল। মনমোহন সিং’র ইউ. পি. এ জমানায় বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থায় শেয়ার কিনতে এল. আই. সি. কে ৬.২ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করতে হয়।