eaibanglai
Homeএই বাংলায়ভেজাল ও দূর্নীতির মায়াজালে রাজ্যবাসীর রান্নাঘর

ভেজাল ও দূর্নীতির মায়াজালে রাজ্যবাসীর রান্নাঘর

এই বাংলায়, নিউজ ডেস্কঃ বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছোট-বড় বিভিন্ন বাজারে-চোখ ফেরালেই নজরে পড়বে রাস্তার ধারে বিভিন্ন দোকানগুলিতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ২ কেজি এবং ৫ কেজি ওজনের ছোট গ্যাস সিলিন্ডার। সাধারণভাবে দেখলে কিচ্ছু বোঝার জো নেই, কিন্তু আড়াল থেকে যদি দেখা যায় তাহলে ভয়ে যেকোনো মানুষের হাত-পা ঠান্ডা হতে বাধ্য। কারণ এইসমস্ত দোকানগুলিতেই দিনের পর দিন বেআইনিভাবে বড় সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বের করে ছোট সিলিন্ডারগুলি রিফিলিং করার কাজ চলছে। সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক ও অবৈধভাবে এই রান্নার গ্যাস বিক্রি করে মোটা টাকা মুনাফা লুটছে এইসমস্ত দোকানদাররা। বর্তমানে সাড়ে ১৪.২ কেজি গ্যাসের দাম ৮০০ টাকার আশেপাশে রয়েছে। কিন্তু এইসমস্ত দোকানে ২ কেজি ও পাঁচ কেজির সিলিন্ডারে গ্যাস ভরে সেই গ্যাস কেজি প্রতি ৮০-৯০ টাকা দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তাহলে হিসাব মতো এক-একটি ১৪.২ কেজির গ্যাস থেকে এইসমস্ত দোকানদাররা ১২০০-১৪০০ টাকা আয় করছে। আর বর্তমান বাজারে ছোট সিলিন্ডারের বিপুল চাহিদা থাকায় বেশি দামেও গ্যাস কিনতে রাজি হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ব্যাবসায়িক বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে এইসব ব্যবসায়ীরা যে কি বিপদ ডেকে আনছে তা হয়তো তারাও আন্দাজ করতে পারছেন না। কারণ বড় সিলিন্ডার থেকে ছোট সিলিন্ডারগুলিতে যেভাবে গ্যাস রিফিলিং করা হয়, তার ফলে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। কিন্তু প্রশাসন সব জেনেও নিশ্চুপ। মাঝেমধ্যে বার কয়েক বিভিন্ন দোকানে হানা দেওয়া হলেও তা খুবই নগণ্য। বন্ধ হয়নি এই বেআইনি কারবার। প্রশাসনের নাকের ডগায় দিনের পর দিন রান্নার গ্যাসের বেআইনি ব্যবসা চলছেই।
এ তো গেল রান্নার গ্যাসের কালোবাজারির কথা। দূর্নীতির এই ইঁদুর দৌড়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই গৃহিনীদের দৈনন্দিন রান্নার অন্যতম উপকরণ হলুদ। ১২ থেকে ১৪ প্রকার বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করে তৈরী হচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যের অন্যতম উপকরণ হলুদ। আঁতকে উঠলেন? এটাই সত্যি। সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় পুলিশি হানায় এমনই হলুদ তৈরীর কারখানার পর্দাফাঁস করেছে দেগঙ্গা থানার পুলিশ। জানা গেছে, ওই কারখানায় চালের গুড়োর সঙ্গে ১২ থেকে ১৪ রকমের বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করে হলুদ প্রস্তুত করা হত। সেই হলুদই প্যাকেটজাত করে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হত। তাহলে বুঝুন, আপনার, আমার রান্নাঘরেও যে ওই বিষ প্রবেশ করেনি তা জোরের সঙ্গে কেউ বলতে পারেন? ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। ওই কারখানা থেকে উদ্ধার হয়েছে চালের গুড়ো সমেত একাধিক রাসায়নিক সামগ্রী। পুলিশের বক্তব্য থেকে জানা গেছে, লাল রঙের একধরণের রাসায়নিক ওই কারখানা থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে যা সামান্য হাতে নিলেই মুহুর্তে হাতে জ্বালা শুরু হয়ে যাচ্ছে। ফলে এই জিনিস পেটে গেলে কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে তা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। যেভাবে রাজ্য জুড়ে ভেজাল সামগ্রীর কারবার শুরু হয়েছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে বোধহয় আমরা আর নুন খেয়ে কারোর গুণ গাইতে পারব না। কারণ সেই নুনেও হয়তো ব্যবহার করা হবে ভেজাল বা বিষাক্ত রাসায়নিক। প্লাস্টিক চাল, প্লাস্টিক দুধ, ভেজাল চিনির পর এবার রাসায়নিক হলুদ। এরপর রাজ্যবাসীর জন্য যে কি অপেক্ষা করে আছে তা হয়তো ঈশ্বরই জানেন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments