সংবাদদাতা, কাটোয়াঃ- নকল হিজড়ের দাপটে বেজায় অস্বস্তিতে পড়ছেন কাটোয়া শাখার রেল যাত্রীরা। যখন তখন, যে কোনো ট্রেনের কামরায় উঠে কয়েকটি দলে বিভক্ত কিছু যুবক যাকে বলে লুঠপাট চালাচ্ছে। ‘অসহায়’ রেল যাত্রীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে টাকা, পয়সা, মোবাইল, হাতঘড়ি। আর তাদের এই ‘সন্ত্রাসে’ সবচেয়ে বেশি সঙ্কটে পড়েছে আসল হিজড়ে বা বৃহন্নলাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন। রবিবার দিনভর কাটোয়া, ধাত্রীগ্রাম, পূর্বস্থলী রেল ষ্টেশনে গিয়ে আসল হিজড়েদের বিভিন্ন দল সাধারন রেল যাত্রীদের সতর্ক করল নকল লুঠেরা হিজড়েদের বিষয়ে। ব্যান্ডেল-কাটোয়া এবং কাটোয়া- আজিমগঞ্জ শাখার ট্রেনগুলিতে গত প্রায় দেড় মাস যাবৎ এক শ্রেনীর সন্ত্রাসী হিজড়ে বাহিনী হামলা চালাচ্ছে। ভিক্ষা চাওয়ার ছলে নানান হিজড়ে সুলভ কসরৎ করার পরও টাকা না পেলে তারা যাত্রীদের গায়ে আলপিন ফুটিয়ে দিচ্ছে। কাটোয়া জি আরপি তে এই নিয়ে চারটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে অগস্ট- সেপ্টেম্বরে। আসল বৃহন্নলাদের দলনেত্রী পিঙ্কি চৌধুরী বলেন, ” এক শ্রেনীর যুবক হিজড়ে সেজে ট্রেনে হামলা চালাচ্ছে আর বদনাম হচ্ছে আমাদের। আমরা রেল পুলিশকে আগে জানিয়েও ছিলাম।” পিঙ্কি বলেন, “তাতেও কোনো কাজ না হওয়ায় আমরাই সাধারন যাত্রীদের সতর্ক করতে বেরিয়েছি।” আর এক বৃহন্নলা ফিরোজ শেখ বলেন, “আমাদের কাছে খবর আসে ওরা মুখে অশ্রাব্য গালাগালি ও করে টাকা না পেলে। আবার কোনো কোনো মহিলা যাত্রীর গায়েও নানা অছিলায় হাত দিচ্ছে। আসল বৃহন্নলারা এ সব করে না।” কাটোয়া শাখায় প্রায় ডজন খানেক আসল বৃহন্নলা আছেন। বছরের পর বছর রেল যাত্রীদের মনোরঞ্জনের মাধ্যমে ভিক্ষা করাই তাদের রুটি রুজি। কালনা- কাটোয়া রেল পুলিশের আধিকারিক সুমন ঘোষ বলেন, “আমাদের কাছে বেশকিছু চূড়ান্ত অসভ্যতার অভিযোগ আসার পরই আমরা গোটা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খোঁজ নিতে শুরু করি।” তিনি বলেন,” আমাদের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, বেশকিছু বেকার যুবক অন্যকায়দায় নকল হিজড়ে সেজে যাত্রীদের সাথে প্রতারনা, দুর্ব্যবহার করছে। তখনি আমরা আসল হিজড়েদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করি ও এইসব নকল হিজড়ে ধরতে তাদের সহযোগিতা চাই।”