সংবাদদাতা, হাওড়াঃ- হাসপাতাল থেকে হয়তো আর কোনো সময়েই বাড়ি ফেরা হবে না। ২০১০ সালে বরানগরের বাসিন্দা সন্দীপ বাবু জিভে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই সময় সন্দীপ বাবু’র অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। এরপরে সন্দীপ বাবু বেশ সস্থু’ই ছিলেন। কিন্তু ৭ বছর পর আবার ঘুরে ফিরে একই সমস্যা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে সন্দীপ বাবু’র বায়োপসি করে দেখা যায় তার ফুসফুস পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছে ক্যানসার। সন্দীপ বাবু’র ক্যানসার ছিল চার নম্বর পর্যায়ে। সন্দীপ বাবু কিছুই খাওয়া দাওয়া করতে পারছিলেন না। দিন দিন তার শরীরের ওজন কমে যাচ্ছিল। চিকিৎসকদের মতে চার নম্বর পর্যায়ের ক্যানসার রোগীরা সাধারনত এক বছরের বেশি বাঁচে না। এ দিকে সন্দীপ বাবু’র এহেন অবস্থা দেখে বাড়ির লোকেদের মধ্যে কান্নাকাটি পড়ে যায়। সন্দীপ বাবু জানান, একমাত্র মেয়ের বিয়ে না দেখেই চলে যাব। খুবই দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকা ক্যানসার কে কি ভাবে আটকানো যায়। গভীর বৈঠকের পর চিকিৎসকরা কথা দিয়েছিলেন সন্দীপ বাবু কে তারা ইমিউনোথেরাপি দিয়ে চার বছর বাঁচিয়ে রাখবেন। কিন্তু চার বছরের সীমা শেষ হয়েছে এই ফেব্রুয়ারিতেই। এই অসুখের সঙ্গে সঙ্গে লড়াই করতে করতে সন্দীপ বাবু ও ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। তাই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সন্দীপ বাবুর শেষ ইচ্ছা জানতে চান। উত্তরে সন্দীপ বাবু জানান, আমি আমার একমাত্র মেয়ের বিয়ে দেখতে চাই। অন্যদিকে ডাক্তার রা দেরী না করে সন্দীপ বাবু’র মেয়ের বিয়ের রেজিস্ট্রির ব্যবস্থা করলেন। এবং সমস্ত আত্মীয়স্বজনদের হাসপাতালেই আমন্ত্রন করা হল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। সন্দীপ বাবু’র ওয়ার্ডের পাশের ঘরেই তার মেয়ের বিয়ের শুভ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হল। বিছানা গত অবস্থায় সন্দীপ বাবু চোখে একরাশ জল নিয়ে মেয়ের বিয়ের সাক্ষী থাকলেন।