সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী)ঃ– শৈব তীর্থ তারকেশ্বর। এই তারকেশ্বরে লীলাময় বাবা তারকনাথ লীলার ছলে প্রচুর মানুষকে দয়া করেন আর বাবা তারকনাথের কৃপায় অনেক অলৌকিক কাণ্ডকারখানা ঘটে । আজ বাবা তারকনাথের এই রকম একটি লীলা মাহাত্ম্যের কাহিনী আপনাদেরকে শোনাবো। হিন্দুর আরাধ্য দেবতা হলেও বাবা তারকনাথের কাছে হিন্দু-মুসলমান বলে কোন ভেদাভেদ নেই। বাবার কাছে তারা সবাই সমান- এই বিষয়টাই বাবা একটা লীলার ছলে প্রমাণ করে দিয়েছেন।
একবার একজন মুসলমান তাঁর গাভীর মৃত বৎসা দোষ নিবারণ করবার জন্য বাবা তারকনাথের নিকট মানসিক করেছিলেন যে, তাঁর মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হলে, সে এক মৃৎ পাত্রে দুধ নিয়ে পুজো দিতে আসবেন। এরপর যখন তাঁর মনস্কামনা পূর্ণ হয় আর তিনি মৃৎ পাত্রে দুধ নিয়ে পুজো দিতে আসেন তখন বাবার মন্দিরের যাত্রীরা তাঁকে তাড়িয়ে দেয় এই বলে যে, মুসলমানের ছোঁয়া দুধ বাবা তারক নাথের পুজোয় চলবে না। ভক্ত মুসলমান মনে ব্যথা পেয়ে কাঁদতে থাকে। এই সময় বাবা তারকনাথ স্বয়ং ওই ভক্তকে কৃপা করতে আসেন। বাবা তারকনাথ একটি সন্ন্যাসীর বেশ ধরে বেল গাছের তলায় ভোগের সোনার বাটি নিয়ে আসেন এবং ঐ মুসলমানের কাছ থেকে দুধ চেয়ে তা পান করে খান। এইদিকে বাবা তারকনাথকে ভোগ নিবেদন করবার সময় ব্রাহ্মণরা দেখেন বাবার ভোগের সোনার বাটিটি নেই। তখন তাঁরা চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং বাবা তারকনাথের সোনার বাটির খোঁজ পরে। এই অনুসন্ধান পর্ব চলাকালীন মুসলমানের হাতে সেই বাটি দেখে লোকেরা তাকেই ধরে নিয়ে যায়। ওই মুসলমান ভক্ত তখন তাঁর সাথে হওয়া সমগ্র ঘটনা মোহান্তকে বলেন। দেবতার অলৌকিক এই গল্প গাথা শুনে মোহান্ত রোমাঞ্চিত হয়ে ওঠেন এবং অজ্ঞাতে ভক্তের হৃদয়ে কষ্ট দেওয়ার জন্য বাবা তারকনাথের কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করেন।