নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুর:- বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসোব। এই দুর্গোৎসোব কে কেন্দ্র করে পুরো শিল্পাঞ্চল জুড়ে এক উদ্দীপনার সাক্ষী থাকে। গোটা রাজ্যবাসীর দূর্গা উৎসব কে সর্বাঙ্গীনভাবে সুন্দর করে তুলতে শুধু যে ক্লাব উদ্যোক্তাদের উদ্যোগী যথেষ্ট তা নয়, কোথাও লাইটম্যান, প্যান্ডেল কর্মী, কোথাও আবার নতুন মৃৎশিল্পীদের আনাগোনা ও তাদের শ্রমের ফল। কিন্তু যে সংস্থা সবথেকে বেশি তাদের কাজের মধ্যে লিপ্ত থাকে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসন। পুলিশের কাজ সকাল থেকে রাত অবধি এক মিনিটও শান্তি নেই। তাদের শহরের যানবাহন থেকে শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা সমস্ত পরিস্থিতিকেই কড়া হাতে দেখভাল করতে হয়। বিগত বছর গুলিতে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করা হয় ক্লাব ও পুজো কমিটিগুলোকে। কিন্তু এবারে ক্লাবের পুজো কমিটি ছাড়াও সাধারণ মানুষ এক অন্যরকমের পুলিশ দেখল দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল জুড়ে। অবাক হয়েছে শহরবাসী পুলিশ নাকি বন্ধুরূপে এসেছে। সে আবার এমন বন্ধু যার মুখের হাসি দেখলে মনে তৃপ্তি আসে। ছোট বাচ্চাদের হোক বা বয়স্কদের হোক কোথাও বয়স্কদের নিয়ে “নামন” নাম করে বেরিয়ে পড়েছেন ঠাকুর দেখাতে। কোথাও আবার যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছেন যে ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্ট তাও আবার হাসি মুখে, নেই তাদের রক্তচক্ষুর চোখ রাঙানি। শহরবাসী অবাক হয়ে দেখছেন যে এ কোন রূপে দেখছেন তারা এই দুর্গাপুর আসানসোল শহরের এই পুলিশদেরকে। এরা তো আগেও ছিলেন কিন্তু কেমন জানি গুরুগম্ভীর এক পরিবেশ তৈরি করে রাখতেন এনারা। কিন্তু হঠাৎ এমন কি হলো যার জন্য পুরো পরিস্থিতি পাল্টে গেল। পুলিশ সেও আবার নাকি হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে রাস্তার ধারে সাধারণ মানুষের সুনাম কুড়াচ্ছে গোটা শিল্পাঞ্চল জুড়ে। পুলিশের এহেন মনোভাবের বদল দেখে সাধু সাধু বলে সাধুবাদ জানাচ্ছেন শিল্পাঞ্চল বাসিরা। কিন্তু পুলিশ তো আগেও ছিল সেই পুলিশই এখনো আছে হঠাৎ কী এমন ঘটল যে পুলিশের মধ্যে এমন একটা বদল হয়ে গেল যে তাদের সশস্ত্র চারিত্রিক গঠনটাই ও অঙ্গভঙ্গি বদলে গেল। তাদের কথাবার্তা বলার ধরন বদলে ফেলে সাধারণ মানুষকে তারা মানুষ মনে করে শুরু করলেন। হঠাৎ এমন কি হলো যে পুলিশের এই আমূল পরিবর্তন হয়ে গেল এর এর পেছনে কি অন্য কোনো কারণ আছে, নাকি রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের “দিদিকে বলো” অনুষ্ঠানের পর থেকেই পুলিশের এই বদল। শহরের বেশ কিছু মানুষ জানিয়েছেন যে যবে থেকে দুর্গাপুর আসানসোল পুলিশ কমিশনারেট নতুন সিপি ও ডিসিপি পদে নতুন লোক এসেছে তবে থেকে দুর্গাপুর পুলিশের এক বদল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যে কোনো ঘটনা বা দুর্ঘটনায় পুলিশের সক্রিয়তায় বেড়ে গিয়েছে। ধরা পড়ছে ছিঁচকে চোর থেকে মাফিয়া তবে কি দুর্গাপুর আসানসোল পুলিশ কমিশনারের ২ নতুন আধিকারিক জন্যই এই বদল, নাকি পুলিশের নিজেদের মধ্যে চিন্তা ধারাতে বদল এনেছে। প্রশাসনিক স্তরে কান পাতলে শোনা যায় যে এখন যিনি দুর্গাপুর আসানসোল পুলিশ কমিশনার ও দুর্গাপুরের ডিসিপি আছেন তারা নাকি অত্যন্ত দক্ষ ও সৎ লোক এলাকায় কোনরকম অসুবিধা হলেই সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তারা ঝাঁপিয়ে পড়ছেন সেই সব সমস্যার সমাধানের পেছনে। পুলিশের এহেন রূপের আমূল পরিবর্তন দেখে দুর্গাপুর আসানসোল জেলাবাসীর নতুন করে পুলিশকে নিয়ে চিন্তা ভাবণা শুরু করেছে। শিল্পাঞ্চলবাসিরা এবার থেকে পুলিশকে ভয় না পেয়ে নিজেদের বন্ধু মনে করার অভ্যেস শুরু করেছেন। যদি সত্যি হয় যে পুলিশের এইরূপ স্থায়ী থাকবে তাহলে হয়তো রাজ্যজুড়ে পুলিশ প্রশাসনের এক নতুন রূপ দেখতে পাবে রাজ্যবাসী। একজন বয়স্ক লোক তো হাসতে হাসতে বলেই ফেললেন যে আগে তো খাঁকী ছিল এখন সাদা হয়েছে পোশাক, তাই সাদা পোশাকে পুলিশ আর কালি লাগাতে চায় না, তাই সাদা পোশাকের সম্মান জানাতেই তারা আজ মনটা কেউ সাদা করেছে।