নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুরঃ- আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাকি, তারপর এই গোটা দেশজুড়ে উদযাপিত হবে দীপাবলি। আলোর উৎসব এই দীপাবলি কে কেন্দ্র করে শহর থেকে গ্রামের মানুষের মধ্যে থাকে এক চরম উদ্দীপনা। শ্রী রামচন্দ্রের অযোধ্যায় ১৪ বছর বনবাসের পর ফিরে আসাকে কেন্দ্র করেই উদযাপিত হয় দীপাবলি। হরেক রকম আলোয় আলোকিত হয় গোটা দেশের বিভিন্ন জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সমস্ত মানুষের বাড়ি। কিন্তু যেমন প্রদীপের তলাতেই থাকে অন্ধকার, এই দীপাবলি এলেই তার পেছন থেকে যায় এক বিরাট সমস্যা, “শব্দ দানব”ও পরিবেশ দূষন। দীপাবলি মানে হরেকরকম পটকা ও আতশবাজির মেলা প্রদর্শনী। তাই চারিদিকে অজস্র আতশবাজির পোড়ানোর কারণে যেমন প্রকৃতি দূষিত হয় তেমনি হূদরোগে আক্রান্ত মানুষদের ও প্রচন্ড কষ্ট হয়। আর সেই সব কথা কে মাথায় রেখে রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আদেশ মেনে দুর্গাপুর আসানসোল পুলিশ কমিশনার পৌঁছে গিয়েছিলেন বিভিন্ন স্কুল ও হাউসিং কম্প্লেক্স গুলিতে। আজ আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনার শ্রী ডি পি সিং, সকাল ১১ টা নাগাদ আসেন দুর্গাপুরে অবস্থিত ডি.এ.ভি মডেল স্কুলে, তার সাথে ছিলেন দুর্গাপুরের ডি সি পি শ্রী অভিষেক গুপ্তা মহাশয়। এদিন তিনি ডি.এ.ভি মডেল স্কুল অডিটোরিয়ামে সমস্ত খুদে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বোঝান কিভাবে দীপাবলি উদযাপন করতে হবে পরিবেশবান্ধব রাস্তায়। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অনুরোধ করেন যে আতশবাজি থেকে দূরে থাকতে। কারন আতশবাজির যে কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস বা বিভিন্ন দূষিত গ্যাস প্রকৃতিতে ছড়াই তাতে আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য ক্ষতিকারক। তিনি একজন স্কুলের মাস্টার মশাই এর মতন সমস্ত খুদে ছাত্র-ছাত্রীদের কে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে শব্দ দানব থেকে যেন তারা দূরে থাকেন। এই দূষণের মাত্রা তাদেরকেই ভবিষ্যতে বহন করতে হবে। ডি.এ.ভি মডেল স্কুল এর সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী পুলিশ কমিশনারকে শিক্ষক রূপে পেয়ে আনন্দিত ও উচ্ছসিত। ডি.এ.ভি মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তথা রিজেনাল ডাইরেক্টর শ্রীমতি পাপিয়া মুখার্জী জানান, তার স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা পুলিশ কমিশনার কে কাছে পেয়ে তাদের মনের কথা বলতে পেরে খুব আনন্দিত। তিনি পুলিশ কমিশনারকে সম্বর্ধনা দিয়ে নিজেদের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে স্বাগত জানান। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে স্কুলের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা এই দিন পুলিশ কমিশনারের কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ হোন। ছাত্র-ছাত্রীরা বলেন যে, আগামী দিওয়ালিতে কোনরকম শব্দ বা পরিবেশ দূষণকারী আতশবাজি ব্যবহার করবেন না। এরপরে পুলিশ কমিশনার দুর্গাপুরের বিধাননগরের আরেকটি স্কুল যান। সেখানেও তিনি ছাত্রছাত্রীদের কাছে অনুরোধ করেন যাতে তারা আতশবাজি থেকে দূরে থাকেন এবং পরিবেশবান্ধব দীপাবলি উদযাপন করেন। পরে পুলিশ কমিশনার আরও দুটি গ্রুপ হাউজিংয়ে যান একটি বিধাননগরে ও একটি সিটি সেন্টারে অবস্থিত। দু’জায়গাতেই তিনি সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করেন যাতে আসন্ন দীপাবলিতে কোনরকম ভাবে দূষন না ছড়ায়।