সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ- এনআরসি বিরোধী বিক্ষোভের আগুন এসে পৌঁছালো বাঁকুড়ার জয়পুরেও। রবিবার সকালে ‘নো সিএবি, নো এনআরসি’ স্লোগানকে সামনে রেখে সামনে জয়পুর তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মিছিল শুরু হয়। মিছিল চলাকালীন বিষ্ণুপুর-কোতুলপুর রাস্তার উপর স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করেন বলে খবর। পরে মিছিল চলাকালীন বিজেপির জয়পুর মণ্ডল কার্যালয়ে ভাঙ্গচুর অগ্নি সংযোগ করা হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনাস্থলে দমকলের একটি ইঞ্জিন পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। খবর পেয়ে ঐ এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছালে তাদেরকেও আক্রমণ করে ক্ষিপ্ত জনতা। এই ঘটনায় দু’জন বিজেপি কর্মী সহ এক সিভিক ভল্যান্টিয়ার আক্রান্ত হয়েছেন বলে বিজেপি সূত্রে দাবী করা হয়েছে। বর্তমানে তারা জয়পুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
খবরে প্রকাশ, এদিন সকালে জয়পুর মোড় থেকে এনআরসি ও ক্যাব বিরোধী মিছিল শুরু করে তৃণমূল। মিছিল কুম্ভস্থল মোড়ের কাছে আসতেই মিছিলের নিয়ন্ত্রণ হারায় তৃণমূল নেতৃত্ব। মিছিল থেকেই রাস্তার জ্বালিয়ে বিষ্ণুপুর-কোতুলপুর রাস্তা অবরোধ করা বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পিছনে শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা রয়েছে বলে বিজেপির তরফে স্পষ্টতই অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব তা মানতে নারাজ। এই ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যেও ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। দিবাকর মণ্ডল নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতে তিনি নিজেও মার খেয়েছেন। বিজেপি নেতা সৌগত পাত্রের দাবী, রাজ্যের এক মন্ত্রীর উপস্থিতিতে জয়পুরে বিজেপির পার্টি অফিস ভাঙ্গচুর ও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনুপ্রবেশকারীরাই কি রাজ্য জুড়ে আন্দোলন করছে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষকে ক্রমাগত ‘উস্কানি’ দিয়ে চলেছেন। আজ বাঁকুড়ার ঘটনা তার প্রমাণ। আগামী দিনে মানুষ এর যোগ্য জবাব দেবেন বলেও তিনি দাবী করেন। বিজেপি নেত্রী সুজাতা খাঁ এনআরসি ও সিএবি বিল পাশ পরবর্ত্তী সময়ি রাজ্য জুড়ে অশান্তির পিছনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ‘ইন্ধন’ রয়েছে দাবী করে বলেন, অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়নের উদ্দেশ্যেই এই আইন পাশ হয়েছে। যে ধরণের ঘটনা ঘটে চলেছে তার পরেও পুলিশ প্রশাসন চুপ কেন তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।
তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ও রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা জয়পুরে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল হয়েছে দাবী করে বলেন, কোন অশান্তির খবর তার কাছে নেই। তবে তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান।