বিশেষ প্রতিনিধি, দুর্গাপুরঃ- নতুন টোল প্লাজা চালু করতে গিয়ে ধুন্ধুমার কান্ড। পিস্তল, বোমা, লাঠি, নিয়ে টোল প্লাজাতে আক্রমন চালালো শতাধিক বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। আক্রান্ত হলেন জাতীয় সড়ক নিগমের ২ আধিকারিক সহ টোল আদায়ের কাজে নিয়োজিত সংস্থার ৫ জন কর্মী। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে দুর্গাপুরের বিধাননগরের আঞ্চলিক সদরে এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত বৈঠক করেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ । তারপর অভিযোগ দায়ের করা হয় বাঁকুড়ার মেজিয়া থানায়।
রানীগঞ্জ -খড়গপুর সংযোগকারী ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর বাঁকুড়ার মেজিয়ায় টোলপ্লাজা বসায় কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা টোল প্লাজা মঙ্গলবার কোন বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই চালু করতে যায় কর্তৃপক্ষ। গোলমাল বাদে তখনই। টোল আদায়ে নিয়োজিত বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা সড়ক ধরে যাতায়াত করা লরি, ছোট গাড়ি আটকে টোল আদায় করতে গেলে শুরু হয় বিতণ্ডা। “কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রায় শতাধিক লোক লাঠি উঁচিয়ে, পিস্তল হাতে হামলা চালায় টোল প্লাজাতে। তাদের মারে আহত হয়ে ৫ জন হাসপাতলে। আমাদের একজন ম্যানেজার টেকনিক্যাল অনন্ত লাল ও একজন অ্যাকাউন্টসের অফিসার মনোরঞ্জন ঘোষ আক্রান্ত হন,” বললেন এস কে মল্লিক। তিনি দুর্গাপুরের জাতীয় সড়ক নিগমের আঞ্চলিক সদরের প্রকল্প অধিকর্তা। তিনি অভিযোগ করেন “সমস্ত দলটি প্রায় ৫০০ মিটার তাড়া করে মনোরঞ্জন কে ধরে। হেনস্থা করে। কেড়ে নেয় তার সরকারি পরিচয় পত্র।”
এদিকে এত বড়ো একটা ঘটনার পরও বাঁকুড়া পুলিশের বিশেষ হেলদোল নেই। পুলিশের তরফে উল্টো বলা হয়েছে “ওনারা এসব কথা আমাদের বলেননি।” জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ যে আচমকাই টোলপ্লাজা চালু করতে যাচ্ছেন এমন কথা না পুলিশ, না জেলা প্রশাসন কেউ জানতো না। পরিস্থিতি আচমকা হাতের বাইরে চলে যাওয়ায় জাতীয় সড়ক নিগম এখন পুলিশের দ্বারস্থ হচ্ছে। যেমনটি বললেন শালতোড়া বিধায়ক স্বপন বাউড়ি। ঘটনার পর তিনি বলেন ” ওরা যে টোল আদায় শুরু করছে তা কেউই জানতো না । আজ সকালে হঠাৎ একটি ফোনে একজন আমাকে বললেন আজ টোলপ্লাজা চালু হবে আপনি এসে উদ্ধোধন করুন। ” বিধায়কের ক্ষোভ, ” বুঝুন কান্ড। আজ সকালে ফোন করে হুকুম করছে- আসুন উদ্বোধন করুন। আমি যাইনি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর অমরকাননে শালি নদীর ওপর ও তারাপুরে একটি জোড়ের ওপর সেতুর রাস্তার কাজ এখনো অসম্পূর্ণ । আবার এই কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে কাজ হারিয়েছেন মানুষ। এ অবস্থায় হঠাৎ সড়কে টোল ট্যাক্স বসিয়ে মানুষকে আরও সমস্যায় ফেলছে জাতীয় সড়ক নিগম। তাই , স্থানীয়রা টোলপ্লাজার বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছেন। জাতীয় সড়ক নিগম সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিষয়টি নিয়ে বাঁকুড়ার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে বৈঠকে বসবেন নিগমের শীর্ষ কর্তারা। নিগম সূত্রে জানানো হয়েছে “কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ওই রাস্তায় টোল আদায়ে আপাততঃ বন্ধ রাখা হয়েছে”।