eaibanglai
Homeএই বাংলায়পুরুলিয়ার হেসাডি গ্রামের শতাধিক শিশুর হাতে তুলে দেওয়া হলো নতুন পোশাক

পুরুলিয়ার হেসাডি গ্রামের শতাধিক শিশুর হাতে তুলে দেওয়া হলো নতুন পোশাক

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,পুরুলিয়াঃ- পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম পিছিয়ে থাকা জেলা হলো পুরুলিয়া। একটা সময় মাওবাদীদের আনাগোনার জন্য এলাকাবাসীরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারতনা। গত কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে অবস্থার পরিবর্তন হয়। সেখানে লাগে উন্নয়নের ছোঁয়া। বহু সংস্থা সেখানকার উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। এলাকার অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। এরকমই একটি সংস্থা হলো ভূমিতীর্থ ফাউণ্ডেশন। পাশে এসে দাঁড়িয়েছে নিউক্র্যাড এগ্রি ফার্ম। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে এই দুই সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ও স্থানীয় জমির মালিকদের নিয়ে গড়ে উঠছে পলাশতীর্থ এগ্রি ফার্ম অ্যাণ্ড হসপিটালিটি।

ইতিমধ্যে পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডির হেসাডি গ্রামে সামাজিক উন্নয়নের পরিকাঠামো গড়ে তুলেছে ভূমিতীর্থ ফাউণ্ডেশন। বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করে তারা মানুষের মধ্যে পরিচিতি লাভও করেছে। এবার তারা এলাকার জনপ্রিয় উৎসব বাঁদনা পরব ও দীপাবলির প্রাক্কালে সেখানকার ছোট ছোট বাচ্চাদের হাতে নতুন পোশাক উপহার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বেশ কয়েকজন শুভানুধ্যায়ীও অর্থসাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন ৷

গত ২৩ অক্টোবর স্থানীয় মানুষজনের উপস্থিতিতে হেসাডি গ্রামের পূর্ব নির্ধারিত প্রায় ১৪০ জন বাচ্চার হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন পোশাক। এছাড়াও তুলে দেওয়া হয় খাতা, রং-পেন্সিল ও জলের বোতল। পলাশতীর্থ এগ্রি ফার্ম অ্যাণ্ড হসপিটালিটির পক্ষ থেকে তাদের প্রত্যেকের হাতে তুলে দেওয়া হয় ক্রিমরোল, কেক ও চকোলেটসহ একটি করে টিফিনের প্যাকেট। উৎসবের আগেই নতুন পোশাক, পড়াশোনার সামগ্রী ও টিফিনের প্যাকেট পেয়ে বাচ্চারা খুব খুশি হয়। তাদের চোখেমুখে ঝরে পড়ে আনন্দের ঝিলিক। স্থানীয় বাসিন্দাদের সাঁওতালী নৃত্য সমগ্র অনুষ্ঠানটিতে আলাদা মাত্রা এনে দেয়। উপস্থিত কর্মকর্তাদেরও নৃত্যের তালে তালে পা মেলাতে দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যে সেটি রঙিন ও সুন্দর হয়ে ওঠে ৷

পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রী বিতরণের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন আশিস মাহাত, অশোক মাহাত, পঞ্চানন মাহাত সহ ফাউণ্ডেশনের অন্যান্য সদস্যরা ৷

প্রসঙ্গত পলাশতীর্থের অবস্থান হলো অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত হেসাডি গ্রামে। দুই দিক দিয়ে বয়ে গেছে সাহারজুড়ি নদী৷ কাছাকাছি আছে ছলছলিয়া জলপ্রপাত, মার্বেলহ্রদ, বামনি প্রপাত, তুর্গা প্রপাত, আপার ও লোয়ার ড্যাম, মুরুগুমা জলাধার ও খয়রাবেড়িয়া জলাধার। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এলাকাটিকে ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলার জন্য কাজ চলছে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে চলেছে সরকারি ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি।

পলাশতীর্থের অন্যতম কান্ডারি আমেরিকায় গবেষণারত বাঙালি বিজ্ঞানী বিশ্বরূপ ঘোষ বললেন – আমাদের লক্ষ্য হেসাডি গ্রামকে কেন্দ্র করে অর্গানিক চাষের পাশাপাশি পশুপালন, পোল্ট্রি ফার্মিং সহ অন্যান্য দিকগুলোতে গুরুত্ব দেওয়া। সরকারি সাহায্য মিললে গড়ে তোলা হবে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প। ফলে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে। এই উন্নয়নের জন্য আমরা এলাকার মানুষদের সামিল করার চেষ্টা করছি। সর্বদা তাদের পাশে থাকার জন্য গড়ে তুলেছি পলাশতীর্থ। আশাকরি সবার সহযোগিতায় এটি উন্নয়নের তীর্থক্ষেত্র হয়ে উঠবে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments