সংবাদদাতা,পুরুলিয়াঃ– আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রকৃতির পুজো সারহুল উৎসব পালিত হয়ে আসছে বহু প্রাচীন কাল থেকে। এ যেন আদিবাসী মানুষের বসন্ত উৎসব। ফাগুনের শাল, পলাশ ও মহুল ফুলের আগমন বার্তা বয়ে নিয়ে আসে সারহুল মায়ের।
রবিবার পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডি ব্লকের তুন্তুরী সুইসা অঞ্চলের তুন্তুরী গ্রামের তুন্তুরী আদিবাসী সারহুল কমিটির পক্ষ থেকে তুন্তুরী নামোপাড়া সারনা ময়দানে পালিত হল সারহুল উৎসব। এদিন সকালে প্রকৃতির পুজো দিয়ে শুরু সারহুল উৎসব। আদিবাসী সম্প্রদায়ে এই প্রকৃতি দেবী সারহুল মা হিসেবে পূজিতা হন। এদিন সারনা ময়দানে একটি বড় পাথরের উপর শাল গাছ পুতে সাড়ম্বরে পুজো দিয়ে সারহুল উৎসবের শুভ সূচনা করা হয় এবং সারাদিনব্যাপী একাধিক আদিবাসী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনটি সাড়ম্বরে পালিত হয়।
তুন্তুরী আদিবাসী সারহুল কমিটির সভাপতি নবীন সিং জানান,এই সরহুল উৎসব বহু প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে। যা আদিবাসীদের মূল উৎসব। বর্তমানে নতুন প্রজন্মকে এই সারহুল উৎসব নিয়ে অবগত করার জন্যই এই বৎসর থেকে তুন্তুরী আদিবাসী সারহুল কমিটির পক্ষ তুন্তুরী নামোপাড়া সারনা ময়দানে শুরু হয়েছে সারহুল উৎসব।
অন্যদিকে, বাঘমুন্ডি শাখার মানভুম আদিবাসী কল্যাণ সমিতির অবনী ভূষণ সিং জানান, পরম্পরা ভাবে এই সারহুল উৎসব চলে আসছে আদিবাসী সমাজে । আগে এই সারহুল উৎসব পশ্চিমবঙ্গে খুব প্রচলিত ছিল না বললেই চলে। কিন্তু ধীরে ধীরে এই সারহুল উৎসব পশ্চিমবঙ্গে বিস্তার লাভ করছে । তিনি আরও বলেন আদিবাসী সমাজ হচ্ছে প্রকৃতির প্রেমী, প্রকৃতির পূজারী। ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে গাছের যখন নতুন পাতা গজায় পাশাপাশি শাল ও পলাশ মহুয়া গাছে ফুল আসে তখন প্রাকৃতির বন্দনা করে জঙ্গলের জিনিস ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হয় সারহুল মায়ের কাছে।
মানভুম আদিবাসী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক ড: সুরেশ সিং জানান,আজকে আদিবাসীদের সারনা ধর্ম প্রায় বিলুপ্তর পথে । তাই তাকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে সরকারের কাছে আবেদন জানানো হবে।
এদিনের উৎসবে উপস্তিত ছিলেন বাঘমুন্ডি থেকে আগত মানভুম আদিবাসী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক ড: সুরেশ সিং ছাড়াও সমিতির সদস্য অবনী ভূষণ সিং, বুদ্ধেশ্বর সিং মুড়া, সুধীর সিং সর্দার,সন্তোষ কুমার সিং মুড়া,রাম কিঙ্কর সিং মুড়া, মহর সিং মুড়া,পদ্মলোচন সিং মুড়া,উপেন সিং মুড়া, লক্ষ্মীচরণ সিং মুড়া (বুকুন) এছাড়াও তুন্তুরী আদিবাসী সারহুল কমিটির সভাপতি নবীন সিং মুড়া সহ কমিটির সকল সদস্য ছাড়াও কয়েক হাজার আদবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন |