eaibanglai
Homeএই বাংলায়মঠের প্রথম দুর্গাপুজোয় ইচ্ছা জ্বর চেয়েছিলেন স্বামীজি! কেন?

মঠের প্রথম দুর্গাপুজোয় ইচ্ছা জ্বর চেয়েছিলেন স্বামীজি! কেন?

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী),বহরমপুরঃ- স্বামী বিবেকানন্দের বাবার মৃত্যুর পর স্বামীজি একবার রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে তাদের সমস্যার কথা দারিদ্র্যের কথা বলেছিলেন এবং তার সমস্যা যাতে কিছু সুরাহা হয় তা মা ভবতারিণীর কাছ থেকে চেয়ে নিতে বলেছিলেন রামকৃষ্ণ দেবকে। রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব তখন তাকে বলেছিলেন যে, তুই নিজে গিয়ে মায়ের কাছে চেয়ে নে। এরপর স্বামীজি মায়ের কাছে চাইতে গেলেন। কিন্তু মায়ের দেবী মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে তিনি নিজের সমস্যা সমাধানের কথা, একটা চাকরি পাওয়ার কথা ঐশ্বর্য ও ধন সম্পদ চেয়ে নেওয়ার কথা বলতে ভুলে গেলেন। তিনি মায়ের কাছে চাইলেন জ্ঞান, বিবেক, বৈরাগ্য।

এই স্বামীজিই একবার মায়ের কাছে জ্বর চেয়েছিলেন নিজের জন্য। শ্রী শ্রী মা এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন কেন মায়ের কাছে জ্বর চেয়েছিলেন স্বামীজি। তাও আবার মঠের প্রথম দুর্গাপুজোর মধ্যে? শ্রী শ্রী মায়ের কথায়, “আহা! নরেন আমাকে মঠে নিয়ে গিয়ে প্রথম পূজা যেবার করায়, সেবার পূজককে দিয়ে আমার হাত দিয়ে পঁচিশ টাকা দক্ষিণা দেওয়ালে। চৌদ্দশ টাকা খরচ করেছিল। পুজোর দিন লোকে লোকারণ্য হয়ে গেছে। ছেলেরা সবাই খাটছে। নরেন এসে বলে কি,‘মা আমার জ্বর করে দাও’। ওমা বলতে না বলতে খানিক বাদে হাড় কেঁপে জ্বর এলো। আমি বলি,‘ ওমা, একি হল, এখন কি হবে?’ নরেন বললে,‘কোনো চিন্তা নাই মা। আমি সেধে জ্বর নিলুম এইজন্য যে, ছেলেগুলো প্রাণপন করে তো খাটছে তবু কোথায় কি ত্রুটি হবে আর আমি রেগে যাব, বকবো, চাই দুটো থাপ্পড়ই দিয়ে বসবো, তখন ওদেরও কষ্ট হবে, আমারও কষ্ট হবে। তাই ভাবলুম কাজ কি, থাকি কিছুক্ষণ জ্বরে পড়ে।’ তারপর কাজকর্ম চুকে আসতেই আমি বললুম,‘ও নরেন, এখন তাহলে ওঠ।’ নরেন বললে, ‘হাঁ মা, এই উঠলুম আর কি।’ এই বলে সুস্থ হয়ে যেমন তেমনি উঠে বসল।”

শ্রী শ্রী মায়ের কথায় স্বামীজীর এই ঘটনা জানলে বোঝা যায় যে স্বামীজি চাইলেই নিজের আধ্যাত্মিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে অনেক কিছুই করতে পারতেন, কারণ রোগ, ভোগ মৃত্যুর সমস্তটাই ছিল তার ইচ্ছাধীন। কিন্তু তিনি জানতেন তিনি যা করেছেন অল্প সময়ে তা যথেষ্ট পরবর্তী সকল প্রজন্মের জন্য। তাই তো মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে স্বামীজি বলেছিলেন এই বিবেকানন্দ যা করে গেল তা বুঝতে আরও একজন বিবেকানন্দের প্রয়োজন। সত্যি তো স্বামীজি যেভাবে বিদেশের মাটিতে সনাতন ধর্মকে গৌরবের সঙ্গে প্রকাশ করতে পেরেছিলেন তা আজও আমরা মর্মে মর্মে অনুভব করি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মও করবে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments