৭ই মে, ২৪শে বৈশাখ, বৃহস্পতিবার – গন্ধেশ্বরী পুজো

1116

বহরমপুর থেকে সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে মা গন্ধেশ্বরীর পূজা করা হয়। মা দুর্গারই আরেক রূপ তিনি।তবে এই রূপে দেবী চতুর্ভুজা।

দেবী গন্ধেশ্বরীর ধ্যান মন্ত্রে বলা হয়- “দুর্গা দুর্গতিহারিণী ভবতু নঃ”
অর্থাৎ-হে দেবী,আপনি আমাদের নিকট দুর্গতিহারিণী দুর্গাস্বরূপা হোন। দুর্গতিহারিণী দুর্গা রূপে আমাদের দুঃখ বিনাশ করুন।

দেবী গন্ধেশ্বরীর ধ্যান মন্ত্র অনুযায়ী তিনি সিংহারূঢ়া , ললাটে চন্দ্রকলাযুক্তা , মরকত মণি তুল্য প্রভাময়ী, চারি হস্তে শঙ্খ, চক্র, ধনুর্বাণ ধারিনী, ত্রিনয়না, কেয়ূর- হার- বলয় – শব্দায়মান চন্দ্রহার ও নূপুর পরিহিতা । তিনি উজ্জ্বল কর্ণ কুণ্ডল ধারিনী । এই দেবী আমাদের দুর্গতি নাশ করেন ।

মা গন্ধেশ্বরী মূলতঃ বৈশ্য বণিক শ্রেনীর দ্বারা আরাধিতা। গন্ধবণিক গণ এই দেবীর পূজা প্রচলন করেন । বৈশাখী পূর্ণিমাতে বাণিজ্যে শ্রীবৃদ্ধির জন্য বৈশ্য বণিক সম্প্রদায় এই দেবীর আরাধনা করেন । প্রাচীনকালে বণিক গন ময়ূরপঙ্খি ভাসিয়ে চলতেন বাণিজ্যে। পথে যেমন ঝড়, বৃষ্টি, বন্যা ইত্যাদি আশাঙ্কা ছিলো- তেমনি ডাকাত, বন্য জীব জন্তুর ভয় ছিলো। সমস্ত ভয় সমস্ত দুর্গতি থেকে রক্ষা করেন মা দুর্গতিনাশিণী, ভয়হারিনী অভয়া মা দুর্গা । তাই বণিক শ্রেনী এই দেবীর আরাধনা করেন ।
গন্ধেশ্বরী পূজার পেছনে থাকা লৌকিক কাহিনিটি হলো-
গন্ধাসুর নামক এক ডাকাত এর হাতে বণিকেরা প্রায়শঃই ধন সম্পত্তি হারাতো । পরবর্তীতে বণিক শ্রেনী গন মা গন্ধেশ্বরীর পূজা করেন। মা গন্ধেশ্বরী এই ডাকাতকে বধ করলে বণিকেরা নির্ভয়ে যাত্রা করতে পারতো। দেবী নানা অলঙ্কার ধারন করেন- যা এই বাণিজ্য মারফৎ উৎকর্ষ বা শ্রীবৃদ্ধির প্রতীক । দেবী মরকত বর্না। তপ্তকাঞ্চন ও মরকতের বর্ণ এক। অর্থাৎ বাণিজ্য দ্বারা বণিক শ্রেনীর উন্নতি তথা সম্পত্তি প্রাপ্তির প্রতীক । দেবী মহাশক্তিধারিণী তাই বলশালী সিংহ দেবীর বাহন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here