মনোজ সিংহঃ- আর মাত্র কয়েকটা মাস এর অপেক্ষা তারপরেই শুরু হয়ে যাবে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের কাউন্টডাউন। ইতিমধ্যেই সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং তাদের কর্মীরা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন রাজনৈতিক মিটিং, মিছিল ও প্রচারের উদ্দেশ্যে। করোণা আবহাওয়া এর মধ্যেও চলছে জোর কদমে রাজনৈতিক প্রচার। এখনো পর্যন্ত প্রচারে পশ্চিমবঙ্গে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা ইতিমধ্যে বাড়ি বাড়ি প্রচার করতে শুরু করেছেন তাদের উল্লেখযোগ্য কাজ কর্ম গুলিকে। পিছিয়ে নেই বিজেপি। বিজেপির একাধিক কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরের নেতাকর্মীরা ইতিমধ্যেই বহু জায়গায় ধর্মঘট ,পথ অবরোধ, মিটিং- মিছিল ও আলোচনা সভার মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের জন্য। দিন কয়েকের মধ্যেই বিজেপির শীর্ষ নেতা অমিত শাহ আসছেন পশ্চিমবঙ্গে। তার এই রাজ্য সফরকে ঘিরে সাজ সাজ রব গোটা রাজ্য জুড়ে। জল্পনা তুঙ্গে যে তার এই সফরকালে একাধিক নেতা মন্ত্রী যারা তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে আছেন তারা যোগদান করবেন বিজেপিতে। কিন্তু যে বিষয়টা এখন গোটা রাজ্যজুড়ে সবাইকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে তা হল দাপুটে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী কে নিয়ে।
বেশ কিছুদিন ধরে দাপুটে নেতা ও দক্ষ সংগঠক তৃণমূল কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী সভা ও বিজয়া সম্মেলনী কে কেন্দ্র করে চলছে জল্পনা। ইতিমধ্যেই মেদিনীপুরের একাধিক তৃণমূল কংগ্রেস শীর্ষস্থানীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিরূপ আচরণ ও মন্তব্য করছেন। স্টেট ফরোয়ার্ড এই দাপুটে নেতারা তাতে কিছু আসে যায় না বলে বিভিন্ন সময় তিনি মিটিং-মিছিলে বলে এসেছেন। তিনি তার সভাতে একাধিকবার জানিয়েছেন যে তিনি মাটি থেকে উঠে আসা নেতা কারো দয়া-দাক্ষিণ্যে তিনি আজ নেতা হননি। তার পরিবার বেশ কয়েক দশক ধরে মানুষের সেবায় নিয়োজিত এবং তার অনুগামীরা তাকে “বেঙ্গল টাইগার” আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার ও সোশ্যাল মিডিয়াতে ইতিমধ্যেই তার অনুগামীরা জোরকদমে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন যে তারা আছেন দাদার সাথে। আর এতেই চিন্তার ভাঁজ তৃণমূল কংগ্রেসের কপালে । তাহলে কি সময়ের অপেক্ষা যেকোনো দিন কি শুভেন্দু অধিকারী যোগ দিতে পারেন বিজেপিতে জল্পনা তুঙ্গে। বিজেপির পশ্চিমবঙ্গে যা অবস্থা তাতে এমন কোন মুখ এখনো পর্যন্ত বিজেপি খাড়া করতে পারেনি গোটা পশ্চিমবঙ্গে যাকে তারা আসন্ন নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করে প্রচার চালাতে পারেন। তবে নিঃসন্দেহে যদি শুভেন্দু অধিকারীর মতন একজন দাপুটে লড়াকু নেতা বিজেপিতে যোগদান করেন তাহলে বিজেপির পালে যে হাওয়া লাগবে সে কথা নিশ্চিত হয়ে বলা যায়। শুভেন্দু অধিকারী তবে এখনো পর্যন্ত তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে সেরকম ভাবে মুখ খোলেননি । তবে আকার-ইঙ্গিতে তিনি যে তৃণমূল কংগ্রেসের বেশকিছু নেতাকর্মীদের ওপর রুষ্ট তা বুঝিয়ে দিয়েছেন তার মিটিং-মিছিলের বক্তব্য থেকে।
এদিকে তার এই মনোভাবের কথা জানতে পেরে একাধিক বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতা কর্মীরা ইতিমধ্যেই তাকে দলে আহ্বান করেছেন যাতে তিনি মানুষের জন্য কাজ করতে বিজেপিতে যোগদান করেন। গোটা পশ্চিমবঙ্গে এমন অনেক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কর্মীরা আছেন যাদের প্রথম পছন্দ শুভেন্দু অধিকারী । যদি শুভেন্দু অধিকারি কোনভাবে বিজেপিতে যোগদান করেন তাহলে তারাও যে তার সাথে তৃণমূল ত্যাগ করে বিজেপিতে যাবেন সেকথা একপ্রকার প্রায় নিশ্চিত হয়েই বলা যায়। বিজেপি দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ গন্ডগোল ও কাদা ছোড়াছুড়ি কে রুখে দিতে পারে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে আগমন। তাই বিজেপির কর্মী ও নেতাদের একাংশ এখন থেকেই বলতে শুরু করেছেন যে যদি শুভেন্দু অধিকারীর মতন দাপুটে হেভিওয়েট নেতা বিজেপিতে যোগদান করেন তাহলে তারা তাকে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করতে নামবেন। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা ।