বহরমপুর থেকে সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- আজ আমি সকলকে “শ্রীগুরু” ও “দীক্ষা” সম্পর্কে কিছু কথা বলবো। তার আগে দেখি, গুরু সম্পর্কে ধারণা কে পরিস্কার করে নেওয়া দরকার। গুরু প্রধানত দু’ধরনের হয়। শিক্ষাগুরু ও দীক্ষাগুরু। শিক্ষাগুরু তিনি ই হন যিনি আমাদের পার্থিব ঞ্জান দান করেন। আমাদের মা বাবা, সমাজ, সংসার, পরিবেশ, প্রকৃতি, বন্ধুবান্ধব এদের থেকে আমরা কিছু না কিছু শিখেই থাকি।এরা হলেন শিক্ষা গুরু। দীক্ষাগুরু হলেন তিনিই যিনি আমাদের অধ্যাত্মঞ্জান তথা ব্রহ্মঞ্জান দান করেন। গুরু শব্দের অর্থ কী? এই গুরু শব্দটি তিনটি বর্ণ নিয়ে গঠিত।যথা-গ,উ,র। গ শব্দের অর্থ সিদ্ধিদাতা, র শব্দের অর্থ পাপনাশক, আর উ শব্দের অর্থ শিব। অর্থাৎ গুরু শব্দের অর্থ দাঁড়ালো যিনি মঙ্গলময় শিব কল্প হয়ে আমাদের যাবতীয় পাপ নাশ করে ঈষ্ট সাধনায় সিদ্ধি দান করতে পারেন তিনিই আমাদের দীক্ষাগুরু। এখন দীক্ষা কী এই প্রশ্ন মনে আসবে? দহ+মন্+আ=দীক্ষা। তাই দীক্ষা শব্দের অর্থ হলো আমাদের আজন্ম সঞ্চিত সংস্কার সমূহ দগ্ধ করে সত্যের বা পরমেশ্বরের পথে চলবার সামর্থ্য অর্জন ও পরম মুক্তির পথে অগ্রসর হওয়া। আমাদের মনুষ্য জন্মে কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ, মাৎসর্য্য রুপী ষড়ঋপু আছে। অহর্নিশি এই রিপুর টানে জর্জরিত আমরা ভগবানের পাদপদ্মে মন রাখতে পারি না। আবার এই সকল রিপুর জন্যই এত দুঃখকষ্ট, জ্বরাব্যাধি! সদ গুরুর আশ্রয় নিলে আমরা জীবন অতিবাহিত করার শিক্ষা পাবো। আমাদের মনের মধ্যে থাকা ঈর্ষা, হিংসা, লোভ নিয়ন্ত্রণে আসবে। পাপ চিন্তা মাথায় আসবেনা আর। ফলে সংসারেও শান্তি আসবে,সুখ আসবে। গুরুদেবকে সেবাভক্তি করলে তার উপদেশ অনুসারে চললে,যে পূণ্য লাভ হয় তার ফলে জন্মের পাপ থেকে মুক্তি ঘটে। এছাড়া যারা পরমার্থিক উন্নতি চান তাদের তো অবশ্যই গুরু আশ্রয় করা উচিত।